জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বায়ুর গুণাগুণ সংক্রান্ত যে নির্দেশিকা দিয়েছে, তাকে মানদণ্ড হিসেবে ধরা হলে ২০২২ সালে বিশ্বের ৯০ শতাংশ দেশ ও ভৌগোলিক অঞ্চলের  বাতাস ছিল দূষিত; তার মধ্যে ৮টি দেশের বাতাসের দূষণ ছিল ভয়াবহ পর্যায়ে।

এই দেশগুলো হলো— বাংলাদেশ, পাকিস্তান, বাহরাইন, বুরকিনা ফাসো, শাদ, ইরাক, কুয়েত এবং ভারত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সুইজারল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানি আইকিউএয়ারের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অবলম্বনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

বিভিন্ন দেশের বায়ুমান পরিমাপের জন্য এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) নামের একটি সূচক আছে জাতিসংঘের। সেই সূচক অনুযায়ী, কোনো শহরের বায়ুমান যদি ০ থেকে ৫০ পয়েন্টের মধ্যে থাকে তাহলে তা ‘ভালো’, ৫১ থেকে ১০০’র মধ্যে থাকলে ‘সন্তোষজনক’, ১০১ থেকে ২০০ পয়েন্টের মধ্যে থাকলে ‘সহনীয়’, ২০১ থেকে ৩০০’র মধ্যে থাকলে ‘খারাপ’,  ৩০১ থেকে ৪০০’র মধ্যে থাকলে ‘খুব খারাপ’ এবং ৪০১ থেকে ৫০০’র মধ্যে থাকলে ‘গুরুতর’।

কোনো এলাকার বায়ুদূষণ ঘটে প্রধানত দু’টি কারণে— বিষাক্ত গ্যাসের অথবা অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার (পিএম ২ দশমিক৫)। আইকিউএয়ারের প্রতিবেদনে পিএম ২ দশমিক ৫ বস্তুকণার উপস্থিতির কারণে সৃষ্ট দূষণকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক পরিমাপ পদ্ধতি অনুযায়ী, ১ লাখ মাইক্রোগ্রাম সমান ১ গ্রাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২১ নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পিএম ২.৫ ভুক্ত বস্তুকণাগুলোর ওজন ৫ থেকে ১০ মাইক্রোগ্রামের মধ্যে। সাধারণত পেট্রোল ও ডিজেল চালিত গাড়ি ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপন্ন ধোঁয়াই এসব বস্তুকণার উৎস।

এসব বস্তুকণার উপস্থিতির কারণে সৃষ্ট দূষণযুক্ত বাতাসে যদি মানুষ দীর্ঘদিন বসবাস করে, সেক্ষেত্রে হৃদরোগ, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হাঁপানি এমনকি ক্যানসারের মতো প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হওয়ার গুরুতর ঝুঁকি থাকে।

বায়ুদূষণ বা বাতাসে ক্ষুদ্রকণার উপস্থিতির কারণে প্রতিবছর বিশ্বে অকালমৃত্যু হয় অর্ধকোটিরও বেশি মানুষের। আর এসব মৃত্যুর অধিকাংশই ঘটে স্বল্পোন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে।

১৩১টি দেশের বাতাসের গুণাগুণ যাচাই করে প্রতিবেদনেটি প্রস্তুত করেছে আইকিউএয়ার। প্রতিবেদনে অবশ্য ২০২২ সালে সবচেয়ে কম বায়ুদূষণ ঘটা দেশ ও টেরিটোরির নামও উল্লেখ করা হয়েছে। দেখা গেছে— এই তালিকায় আছে ৬ টি দেশ এবং ৭টি টেরিটরি।

দেশগুলো হলো—অস্ট্রেলিয়া, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, গ্রেনাডা, আইসল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ড। আর যে ৭টি টেরিটোরির নাম উল্লেখ করেছে আইকিএয়ার, সেগুলোর সবই প্রশান্ত বা ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের বিভিন্ন দ্বীপ।

এসএমডব্লিউ