কৃষ্ণ সাগরে গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি নজরদারি ড্রোন ভূপাতিত করে রাশিয়া। এমকিউ-৯ মডেলের ড্রোনটি কৃষ্ণ সাগরীয় অঞ্চলে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছিল। ওই সময় রাশিয়ার দু’টি এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমান ড্রোনটির ওপর ফুয়েল ছিটিয়ে ও ধাক্কা মেরে এটি অকার্যকর করে দেয়।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা শনিবার (১৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করার সঙ্গে জড়িত দুই যুদ্ধবিমানের পাইলটকে পুরস্কার দিয়েছে রাশিয়া।

শুক্রবার রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। যে স্থানে ড্রোনটি ভূপাতিত করা হয়েছে, সেটি রাশিয়ার দখলকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাছে অবস্থিত। ক্রিমিয়ার কাছে যেন কোনো ধরনের নজরদারি যান না আসতে পারে সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকে রুশ বাহিনী।

রুশপন্থি রাজনৈতিক বিশ্লেষক সের্গেই মারকোভ বলেছেন, ‘এ দুই পাইলটকে পুরস্কার দেওয়ার বিষয়টি পরিস্কার বার্তা দিচ্ছে, রাশিয়া ড্রোন ভূপাতিত অব্যাহত রাখবে।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্তটি রাশিয়ার মানুষের শক্তিশালী সমর্থন পাবে, যারা চায় সরকার কঠোর নীতি গ্রহণ করুক।’

এদিকে ঘটনার পরের দিন ড্রোন ভূপাতিত করার একটি ভিডিও প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে দেখা যায়, রাশিয়ার এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমান মার্কিন ড্রোনকে বাঁধা দিচ্ছে। এছাড়া ড্রোনটির ওপর ফুয়েল ছিটিয়ে দিতে দিতে খুব কাছ দিয়ে ঘেষে যাচ্ছে যুদ্ধবিমান। মূলত ড্রোনে থাকা অপটিক্যাল এবং অন্যান্য উচ্চ-প্রযুক্তি যন্ত্রাংশগুলো ধ্বংস করে দিতে ড্রোনের ওপর ফুয়েল ছিটিয়ে দেয় বিমানগুলো।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী পরবর্তীতে জানায়, ড্রোনটির পাখায় আঘাত হানে রুশ যুদ্ধবিমান। এরপর তারা এটি পানিতে ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে রাশিয়া ড্রোনের গায়ে সরাসরি আঘাত হানার বিষয়টির অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, ড্রোনটি কৌশল অবলম্বন করার সময় পড়ে যায়।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, কৃষ্ণ সাগরের গভীরতা বেশি হওয়ায়, তাদের পক্ষে ড্রোনটি উদ্ধার করা সম্ভব নয়। তবে রাশিয়া জানিয়েছে, ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপোল বন্দর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে পানির ৮৫০-৯০০ মিটার গভীরে ড্রোনটির ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পেয়েছে তারা।

রাশিয়া ড্রোন ভূপাতিত করলেও, সেই একই স্থানে আবারও নিজেদের মনুষ্যবিহীন এ যান পাঠিয়েছেন মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা।

সূত্র: আল জাজিরা

এমটিআই