ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের বিরেুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়ে দিল্লিজুড়ে লাখ লাখ পোস্টার সাঁটার অভিযোগে এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ। বুধবার রাজধানী নয়াদিল্লি ও তার আশপাশের এলাকা থেকে তাদের গেপ্তার করা হয়েছে।

বিভিন্ন এলাকা থেকে পোস্টার সরানোর কাজও করতে হচ্ছে পুলিশকে করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ‘কে বা কারা’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপি সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়ে রাজধানী নয়াদিল্লি ও দিল্লির অন্যান্য এলাকা পোস্টারে ছেয়ে ফেলে। একটিই স্লোগান ছিল সব পোস্টারে – ‘মোদি হটাও, দেশ বাঁচাও’।

পোস্টারের সংখ্যা কম হলে হয়তো ব্যাপারটি আমলে নিত না ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকার, কিন্তু রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন এলাকা এই পোস্টারে ছেয়ে যাওয়ার পর টনক নড়ে দিল্লির বিজেপি নেতাকর্মীদের। মঙ্গলবার রাত থেকেই নয়াদিল্লির বিভিন্ন থানায় একের পর এক এফআইআর করতে থাকেন তারা। এ পর্যন্ত শতাধিক এফআইআর থানাগুলোতে জমা পড়েছে বলে জানা গেছে পুলিশসূত্রে।

প্রতিটি এফআইআরে দু’টি অভিযোগ আনা হয়েছে— সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন ও শহরের সৌন্দর্যহানি।

শতাধিক এফআরআই জমা পড়ার পর ‍বৃহস্পতিবার রাজধানী ও তার আশাপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয় জনকে গ্রেপ্তারও করেছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশের মুখপাত্র দীপেন্দ্র পাঠক বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, গ্রেপ্তারদের মধ্যে দু’জন ছাপাখানার মালিক আছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছেন, তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে ছাপাখানায় ৫০ হাজার করে পোস্টার ছাপানোর চুক্তি করা হয়েছিল এবং অগ্রিম অর্থও প্রদান করা হয়েছিল।

এদিকে, এখন পর্যন্ত পোস্টার সাঁটানোর দায় কোনো রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী সরাসরি স্বীকার করেনি, তবে দিল্লির রাজ্যসরকারে আসীন আম আদমি পার্টির (এএপি) দিকেই উঠেছে অভিযোগের তীর। দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র দীপেন্দ্র পাঠকের বক্তব্যেও তার ইঙ্গিত মিলেছে।

দীপেন্দ্র পাঠক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার এএপির কেন্দ্রীয় পার্টি কার্যালয়ের কাছ থেকে একটি ডেলিভারি ভ্যান আটক করা হয়েছে এবং সেই ভ্যান থেকে অনেক পোস্টারও উদ্ধার করা হয়েছে।

‘ভ্যানচালক বলেছেন, তাকে ওই পোস্টার এএপি অফিসে দিয়ে আসতে বলা হয়েছিল। ওই চালক আরও বলেছেন, সোমবারেও তিনি আপ অফিসে পোস্টার দিয়ে এসেছেন।’

বৃহস্পতিবার এক টুইটবার্তায় এএপিও পরোক্ষভাবে স্বীকার করে নিয়েছে, এই ঘটনার জন্য তারাই দায়ী।টুইটবার্তায় পোস্টারের ইমেজের টুইট করে সেটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, ‘এই পোস্টারে আপত্তিকর কী এমন আছে যে মোদিজিকে ১০০টি এফআইআর করতে হয়? প্রধানমন্ত্রী মোদি, সম্ভবত আপনার জানা নেই, ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এক পোস্টারকে এত ভয়?’

এএপির টুইটের প্রতিক্রিয়ায় দিল্লি বিজেপির মুখপাত্র হরিশ খুরানা বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘এএপির সাহস পর্যন্ত নেই যে তারাই ওই পোস্টার মেরেছে, তা স্বীকারের। পোস্টার সেঁটে তারা আইন ভেঙেছে।’

অন্যদিকে পাল্টা এক সংবাদ সম্মেলনে এএপি নেতারা বলেছেন, পোস্টারের দাবি গণতান্ত্রিক। পুলিশের ‘অগণতান্ত্রিক’ আচরণের প্রতিবাদে ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অপসারণের দাবিতে তারা আন্দোলনে শামিল হবেন।

এসএমডব্লিউ