পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (ফাইল ছবি)

রাজনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত পাকিস্তানে যেন উত্তাপ প্রতিদিনই বাড়ছে। এর সঙ্গে যেন প্রতিদিনই বাড়ছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির বিবদমান রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যকার বিদ্যমান দূরত্ব।

এই পরিস্থিতিতে নতুন করে হত্যা চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর প্রধান ইমরান খান। বুধবার (২২ মার্চ) নিজেই এই অভিযোগ সামনে এনেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঞ্জাব এবং ইসলামাবাদের পুলিশ প্রধানরা ‘অন্যদের’ সঙ্গে নিয়ে তাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছে বলে অভিযোগ করেছেন পিটিআই প্রধান ইমরান খান। এমনকি তারা ‘তাকে হত্যা করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে’ বলেও দাবি করেছেন তিনি।

দ্য ডন বলছে, বুধবার লাহোরে নিজের বাসভবন জামান পার্ক থেকে ভাষণ দেন ইমরান খান। সেখানে তিনি বলেন, ‘পাঞ্জাব এবং ইসলামাবাদ পুলিশের আইজি দু’টি পৃথক স্কোয়াড গঠন করেছে। ওই স্কোয়াডের সদস্যরা পিটিআই কর্মীদের সাথে যোগ দেবে এবং পুলিশের ওপর গুলি চালাবে... এটি সশস্ত্র সহিংসতার উস্কানি দেবে এবং অবশেষে (ঘরের ভেতরে) পৌঁছে এক বা দুই দিনের মধ্যে তারা আমাকে হত্যা করবে।’

এদিকে কথিত এই পরিকল্পনার আলোকে পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী তার সমর্থকদের জন্য বিশেষ নির্দেশনাও জারি করেছেন। যে কোনও মূল্যে পুলিশকে উস্কানি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে তিনি পিটিআই কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

ইমরান বলেছেন, ‘পুলিশ যদি কোনও ওয়ারেন্ট বা অন্য কোনও বিষয়ে আমার কাছে যেতে চায়, তাহলে তাদের সরাসরি আমার কাছে যেতে দাও।’

তিনি কখনোই তার দলের কর্মীদের ক্ষতি করতে চান না উল্লেখ করে ইমরান বলেন, ‘এমনকি যদি আমাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তারা আমাকে জেলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, আমি আনন্দের সাথে জেলে যাব। বর্তমান সরকার ব্যর্থ হয়েছে এবং আমাকে হত্যার পরিকল্পনাও ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা বিচলিত হয়ে পড়েছে এবং চরম পদক্ষেপ নিচ্ছে।’

বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার একইসঙ্গে যুবকদেরকে ক্ষমতাসীন সরকারের নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করার আহ্বান জানান। ইমরান বলেন, ‘শেষ বল পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান কারণ সরকার ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চায় যাতে কেউ দাঁড়িয়ে তাদের অন্যায় সম্পর্কে প্রশ্ন না করে।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘যে কয়েকজন (লোক) ক্ষমতার করিডোরে বসে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তারাই প্রকৃত বিশ্বাসঘাতক।’

এদিকে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) বুধবার নাটকীয়ভাবে পাঞ্জাবের আসন্ন নির্বাচন চলতি বছরের ৮ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। বর্তমান তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ এপ্রিল এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

এর ঘণ্টাখানেক আগে দেওয়া ওই ভাষণে ইমরান বলেন, আগামী ৩০ এপ্রিল নির্বাচন হওয়ার সময় নির্ধারিত হওয়া সত্ত্বেও সরকার নির্বাচনী সমাবেশ এবং জনসমাবেশের অনুমতি দিচ্ছে না।

দ্য ডন বলছে, পাকিস্তানের সাবেক এই ক্ষমতাসীন দল আগামী শনিবার (২৫ মার্চ) রাত ৮টার দিকে মিনার-ই-পাকিস্তান মাঠে ঐতিহাসিক জনসভা করার ঘোষণা দিয়েছে।

টিএম