পুলিশকে ধোঁকা দিয়ে পালিয়ে যাওয়া ভারতে শিখদের পৃথক রাষ্ট্রের দাবিতে আন্দোলন করা খালিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংকে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে এক নারীর বাড়িতে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। পরে সিসিটিভি ক্যামেরাকে ফাঁকি দিতে ছাতা মাথায় সেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি।

ফুটেজে দেখা যায়, খালিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিং মুখ লুকানোর জন্য একটি ছাতা নিয়ে সাদা শার্ট এবং গাঢ় নীল জিন্স পরে ওই নারীর বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, অমৃতপাল সিং ও তার সহযোগী পাপালপ্রীত সিংকে হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন বলজিৎ কৌর নামের যে নারী, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ফুটেজের টাইমস্ট্যাম্পে সোমবার লেখা দেখা যায়। অর্থাৎ তাকে গ্রেপ্তারে পাঞ্জাবে পুলিশি অভিযানের দু’দিন পরের এই ফুটেজ।এরপর থেকে পলাতক রয়েছেন এই খালিস্তানি নেতা।

কুরুক্ষেত্রের পুলিশ প্রধান সিং ভোরিয়া বলেছেন, আমরা বলজিৎ কৌরকে গ্রেপ্তার করেছি। তিনি রোববার শাহাবাদে নিজ বাড়িতে অমৃতপাল ও তার সহযোগী পাপালপ্রীত সিংকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তাকে পাঞ্জাব পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

গত শনিবার গ্রেপ্তার এড়াতে ১২ ঘণ্টার মধ্যে পাঁচটি গাড়ি বদল করেন অমৃতপাল সিং। খালিস্তানি নেতার সহযোগী পাপলপ্রীত সিং সেই দিন থেকে তার সাথে ছিলেন এবং দু’জনকেই অন্যান্য সিসিটিভি ফুটেজেও একসঙ্গে দেখা গেছে।

স্বঘোষিত ধর্মপ্রচারক অমৃতপাল সিং ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’ নামের একটি সংগঠনের নেতা। এই সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়েছিল দেশটির অভিনেতা দীপ সিধুর হাতে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় দীপ মারা যাওয়ার পর অনেকটা অচেনা অমৃতপাল ওই সংগঠনটির নেতা বনে যান।

শিখদের অধিকার রক্ষায় সিধু ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’ গড়ে তুলেছিলেন। পরে এই সংগঠনটি দেশটিতে এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান কৃষক আন্দোলনে সমর্থন দেয়।

কৃষকদের তুমুল আন্দোলনের মুখে ২০২১ সালের নভেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকার বহুল আলোচিত কৃষি সংস্কার আইন নিয়ে পিছু হটে। কৃষকদের দাবি সরকার মেনে নিলেও ওয়ারিস পাঞ্জাব দে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখে এবং শিখ ধর্ম ও পাঞ্জাবের সংস্কৃতি রক্ষার প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।

অমৃতপাল সিংয়ের প্রধান সহযোগী লাভপ্রীত সিংয়ের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা রয়েছে। এই মামলায় তার গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিশাল বিক্ষোভের ডাক দেন অমৃতপাল। শিখদের সেই বিক্ষোভে সংঘর্ষে ছয় পুলিশ সদস্য আহত হন।

দেশটির গোয়েন্দারা এনডিটিভিকে বলেছেন, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে পাঞ্জাবকে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে বিভক্ত করার চেষ্টা পর্যন্ত সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন অমৃতপাল।

অমৃতপাল সিং নিজেকে খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী জার্নাইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালের অনুসারী বলে দাবি করেন। সমর্থকরা তাকে ‘ভিন্দ্রানওয়ালে ২.০’ বলে ডাকেন।

সূত্র: এনডিটিভি।

এসএস