ভারতের উত্তর প্রদেশে আহত অবস্থায় উদ্ধারের পর সেবাশুশ্রূষা করে একটি সারস পাখিকে সুস্থ করে তুলেছিলেন মোহাম্মদ আরিফ নামে এক ব্যক্তি। তবে কর্তৃপক্ষ এখন সেই সারস পাখিটি জব্দ করেছে।  

মোহাম্মদ আরিফ পাখিটিকে সুস্থ করে তোলার পর তাদের মধ্যে যে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে, সে খবর সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়ে ওঠার পর কর্তৃপক্ষ বিরল প্রজাতির এই পাখিটিকে বন্য প্রাণীদের অভয়ারণ্যে স্থানান্তরিত করেছে। 

একবছর আগে আরিফ তার ক্ষেতে আহত পাখিটিকে পান। এরপর  সেবাশুশ্রূষা করে পাখিটিকে সুস্থ করে তোলেন। আরিফ ভেবেছিলেন সুস্থ হয়ে পাখিটি হয়তো চলে যাবে, কিন্তু সে যায়নি।  

আরিফের সাথে পাখিটির বন্ধুত্বের খবরটি সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়। বিষয়টি ভাইরালও হয়। তারপর মঙ্গলবার বন্যপ্রাণী অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আরিফের বাসায় গিয়ে বলেন ভারতীয় আইনের অধীনে কোনো ব্যক্তির সারস পাখি পোষা বা ঘরে রাখা বা এমনকি তাকে খেতে দেওয়াও বেআইনি। ফলে আরিফ সারসটিকে আর নিজের কাছে রাখতে পারবেন না। 

আরিফ বলেন, আমি বন্যপ্রাণী আইন বিষয়ে কিছু জানি না। আমি একজন কৃষক। কিন্তু আমি যদি পাখিটিকে খাঁচার ভেতর বন্দি করে রাখতাম, তাকে বেধে রাখতাম এবং তাকে কোথাও যেতে না দিতাম, তাহলে আমি বুঝতাম যে বন বিভাগ কেন তাকে আমার কাছ থেকে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু আপনি দেখেছেন পাখিটি মুক্ত অবস্থায় থাকত, নিজের ইচ্ছায় উড়ে বেড়াত, যেখানে যেতে চাইত যেত। আপনি কি কখনও দেখেছেন যে আমি সারসটির চলাফেরা বাধাগ্রস্ত করেছি, তাকে আটকে রেখেছি? 

সারস পাখিটি আরিফের কাছে থাকা অবস্থায় কোন কোন দিন উড়ে চলে যেত, তবে সবসময় সূর্যাস্তের আগেই বাড়ি ফিরে আসত। 

সারসটিকে বন্যপ্রাণী অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নিয়ে যাওয়ার সময় গোটা পথ সেই গাড়ির পেছনে গিয়েছিলেন আরিফ। 

তবে শেষ পর্যন্ত পাখিটিকে কিভাবে রাখা হয়েছে সেটা আর দেখতে পারেনি আরিফ। তিনি বলেন, জানি না পাখিটাকে ওরা কী অবস্থায় রেখেছে। নিশ্চয়ই ওরা ওকে বন্দি করে রেখেছে, নাহলে পাখিটা আমার কাছে ফিরে আসত। আমি চাই পাখিটিকে মুক্ত করে দেওয়া হোক। আমি জানি ও তাহলে আমার কাছেই ফিরে আসবে।  

সূত্র : বিবিসি বাংলা 

এনএফ