পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার ‘স্বল্পভাষী’ ভাইস প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান শুক্রবার দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রহস্যজনক রোগে দেশটির প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির আকস্মিক মৃত্যুর পর তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিলেন।

আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী শপথ নেওয়ার পর প্রথম ভাষণে ৬১ বছর বয়সী সামিয়া হাসান প্রয়াত প্রেসিডেন্ট মাগুফুলির মৃত্যুতে ২১ দিনের শোক ঘোষণা করেন। সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছেন আগামী ২২ ও ২৫ মার্চ। ওইদিন মাগুফুলির শেষকৃত্য হওয়ার কথা। 

কালো স্যুট ও লাল ওড়না পরে শপথ নেওয়ার পর তিনি সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানান তাকে। এ সময় সততার সঙ্গে তানজানিয়ার সংবিধান সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন সামিয়া।

সকাল ১০টায় শপথ শেষে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উদ্দেশে কথা বলার জন্য আজকের এই দিনটি আমার জন্য সুখকর নয় কারণ আমার হৃদয়ে আজ এক ক্ষত তৈরি হয়েছে। আমার রাজনৈতিক জীবনে আমি যত শপথ নিয়েছি সেসবের চেয়ে আজকের এই শপথ ব্যতিক্রম। শোকাবহ এক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমি আজ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব নিলাম।’ 

শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে জল্পনা ও করোনায় আক্রান্ত বলে ‘গুজব’ ছড়ানোর পর ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেখা যাচ্ছিল না মাগুফুলিকে। অবশ্য দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর অস্বীকার করা হয়। 

গত ৬ মার্চ মাগুফুলিকে জাকায়া কিকওয়েট কার্ডিয়াক ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। তবে সে সময় তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। পরে অসুস্থ বোধ করলে ১৪ মার্চ তিনি পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর ১৮ মার্চ তিনি হাসপাতালেই মৃত্যুবরণ করেন।

তানজানিয়ার সংবিধান অনুসারে প্রয়াত মাগুফুলির দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ ২০২৫ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তাই সেই সময় পর্যন্ত এখন দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন সামিয়া।

দেশটির সংবিধান অনুযায়ী ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন প্রেসিডেন্ট তার সহকারী অর্থাৎ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে একজনের নাম প্রস্তাব করবেন। তার মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার জন্য কমপক্ষে অর্ধেক এমপির সমর্থন লাগবে। 

এএস