মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত ও কারাবন্দী গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে জান্তা। মঙ্গলবার জান্তা-নিয়ন্ত্রিত দেশটির নির্বাচন কমিশন সু চির দলকে বিলুপ্তির এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের নতুন কঠোর সামরিক নির্বাচনী খসড়া আইনের আওতায় পুনরায় নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হওয়ায় অং সান সু চির ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসিকে বিলুপ্ত করার ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। 

মিয়ানমারের টেলিভিশন চ্যানেল এমআরটিভির মতে, ২০১৫ ও ২০২০ সালের নির্বাচনে সেনা-সমর্থিত দলগুলোর বিরুদ্ধে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া এনএলডির আগামীকাল (বুধবার) থেকে ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল’ হয়ে যাবে।

২০২০ সালের নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতির মাধ্যমে এনএলডি ক্ষমতা আসে বলে সেনাবাহিনী দাবি করলেও কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি। পরে এই অভিযোগে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটিয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।

এর মধ্য দিয়ে মিয়ানমারে ১০ বছরের গণতান্ত্রিক সরকারের পথচলার অবসান ঘটে এবং দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। গত জানুয়ারিতে জান্তা সরকার দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোকে সেনা-রচিত কঠোর নতুন নির্বাচনী আইনের আওতায় পুনরায় নিবন্ধনের জন্য দুই মাসের সময় বেঁধে দেয়।

দেশটিতে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জান্তা সরকার, সেই নির্বাচনের আগে দলগুলোকে নিবন্ধনের আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু দেশটির বিরোধী রাজনীতিকরা বলেছেন, নির্বাচন অবাধ অথবা সুষ্ঠু হবে না।

গত মাসে মিয়ানমারের জান্তা দেশজুড়ে জারি করা দুই বছরের জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। আগামী আগস্টের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিলেও ফেব্রুয়ারিতে তা স্থগিত করা হয়। ভোট আয়োজনের জন্য সারাদেশের ওপর যথাযথ নিয়ন্ত্রণ নেই জানিয়ে নির্বাচন স্থগিত করে জান্তা।

মিয়ানমারের স্থানীয় একটি পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর মতে, অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহিংসতায় ৩ হাজার ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া একই সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও ২০ হাজারের বেশি মানুষকে।

সূত্র: এএফপি।

এসএস