বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে জরুরি ঋণের (বেইলআউট) কিস্তি পাওয়ার পর জ্বালানি তেলের দাম কমিয়েছে শ্রীলঙ্কার সরকার। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রের জ্বালানি ও বিদ্যুৎমন্ত্রী কাঞ্চনা বিজয়সেকেরা নিশ্চিত করেছেন এ তথ্য।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, আজ ২৯ মার্চ মধ্যরাত থেকে শ্রীলঙ্কার সব অঞ্চলে বিভিন্ন ক্যাটাগরির পেট্রোল ও ডিজেলের খুচরা পর্যায়ের বিক্রয়মূল্য ৮ শতাংশ থেকে ২৬ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পাবে।

‘আইএমএফের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির যাবতীয় শর্ত মেনেই এই মূল্যহ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার,’ সংবাদ সম্মেলনে বলেন কাঞ্চনা বিজয়সেকেরা।

রাজাপাকসে ভাইদের নেতৃত্বাধীন সরকারের অপব্যয়, দুর্নীতি ও করোনা মহামারির জেরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলারের মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় গত বছর ভয়াবহ অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে পড়ে শ্রীলঙ্কা। সংকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানির মতো নিত্যপ্রয়োজিনীয় পণ্য আমাদানির মতো অর্থও ছিল না দেশটির।

ফলে জ্বালানির দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায় এবং গত বছর সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে এই অবস্থা বিরাজ করছিল শ্রীলঙ্কায়।

এই অবস্থায় দেশের অর্থনীতিকে জীবিত রাখতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বরাবর ২৯০ কোটি ডলার জরুরি ঋণের জন্য আবেদন করে প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের নেতৃত্বাধীন সরকার।

প্রায় কয়েক মাস ধরে আইএমএফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা বৈঠকের পর গত ২১ মার্চ ঋণের প্রথম কিস্তি পায় শ্রীলঙ্কার সরকার।

এদিকে, গত কয়েক দিন আগে শ্রীল্কার জ্বালানি তেল শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ট্রেড ইউনিয়নগুলো ধর্মঘট ডেকেছে। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও চীন সম্প্রতি দেশটিতে জ্বালানির স্টেশন খোলার প্রস্তাব দেওয়া ও তাতে সরকারের সায় থাকাই এই ধর্মঘটের কারণ। ফলে দাম কমলেও সাধারণ লোকজন তার সুবিধা পাবেন কিনা— তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল।

তবে মন্ত্রী বলেছেন, সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে রাজধানী কলম্বোসহ বিভিন্ন জেলার প্রধান জ্বালানির স্টেশনগুলো নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ফলে, জনগণের ভোগান্তি হওয়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই।

এসএমডব্লিউ