‘জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা হবে’ মাইকেল মধুসূদন দত্তের বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার এই লাইনটি জীব জগতের জন্য চির সত্য। মানুষকে সবকিছু ছেড়ে একদিন চলে যেতেই হবে। কারণ কেউই চিরকাল বেঁচে থাকবে না। শুধু মানুষের কেন, পৃথিবীর সমগ্র জীবজগতের জন্যেই এটি রূঢ় সত্য। কিন্তু শিগগিরই নাকি এই সত্যের বদল ঘটে মানবজাতি অমরত্ব পেতে চলেছে! সম্প্রতি এক বিজ্ঞানীর গবেষণায় যে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। আর সেই তথ্য ছড়িয়ে পড়তেই নেট দুনিয়ায় বেশ হইচই পড়ে গিয়েছে।

গুগলের সাবেক বিজ্ঞানী কার্জউইলের ভবিষ্যদ্বাণী সত্য প্রমাণিত হলে বদলে যেতে পারে পুরো মানব সভ্যতা। যুগ যুগ ধরে জন্ম-মৃত্যু নিয়ে আমরা যা দেখে এসেছি, যা শুনে এসেছি, তাই নাাকি পরিবর্তন হতে চলেছে। কী সেই ভবিষ্যদ্বাণী? রে কার্জউইল যার ১৪৭টি ভবিষ্যদ্বাণীর ৮৫ শতাংশেরও বেশি সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। ২০২৯ সালের মধ্যে মানুষ অমর হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

৭৫ বছর বয়সী কার্জউইল একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর গবেষণা চালিয়েছেন তিনি। মূলত জেনেটিক্স, ন্যানোটেকনোলজি, রোবোটিক্স ও আরও অনেক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মানুষের অমরত্বের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। যা সম্প্রতি চ্যানেল অ্যাডাজিও নামে একটি ইউটিউব ভিডিয়োতে পোস্ট করা হয়েছে।

২০০৫ সালে প্রকাশিত কার্জউইল তার বই ‘দ্য সিঙ্গুলারিটি ইজ নিয়ার’-এ মানুষের অমরত্ব অর্জনের তথ্যটি জানিয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে ন্যানো প্রযুক্তির অগ্রগতির উদ্ধৃতি দিয়ে মানুষ চিরকাল বেঁচে থাকতে পারবে বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। 

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০২৯ হলো সেই সময় যা আমি ভবিষ্যদ্বাণী করেছি যখন আআই একটি বৈধ টিউরিং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে ও সেজন্য মানুষের বুদ্ধিমত্তার স্তর অর্জন করবে।’ এরপর একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে কার্জউইল আরও জানান, ন্যানোপ্রযুক্তি ও রোবোটিক্স 'ন্যানোবটের জন্ম দেবে, যা মানুষের ক্ষতিগ্রস্ত কোষ ও টিস্যুগুলোকে ঠিক করতে থাকবে। ফলে মানুষ মরণকেও প্রতিরোধ করতে পারবে বলে বিশ্বাস ওই বিজ্ঞানীর।

কার্জউইলের ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে এবারই প্রথম শোরগোল পড়েনি। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে তিনি চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়ে শিরোনামে এসেছিলেন। যেমন বিশ্বের সেরা দাবা খেলোয়াড় ২০০০ সালের মধ্যে একটি কম্পিউটারের কাছে হেরে যাবে, যা ১৯৯৭ সালে সত্যি প্রমাণিত হয়েছিল যখন ক্রোয়েশিয়ার গ্যারি কাসপারভ কম্পিউটার ডিপ ব্লুর কাছে হেরেছিলেন। তবে অমরত্বের ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হলে আগামী দিনে মানুষ অমর হতে চলেছে কিনা এখন সেটাই দেখার।

কেএ