ব্রিটেনের ওষুধপ্রস্তুতকারক কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার পর ডেনমার্কের একটি হাসপাতালের দুই কর্মীর শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার খবর পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে ওই দুই কর্মীর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে শনিবার ইউরোপের এই দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

রাজধানী কোপেনহেগেনের সরকারি ওই হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ বলেছে, অসুস্থ হওয়ার ১৪দিন আগে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন ওই দুই কর্মী। তাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন।

ডেনিশ মেডিসিনস সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নেওয়ার পর দু’জনের গুরুতর অসুস্থ হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করলেও এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য দেয়নি। এমনকি হাসপাতালের ওই কর্মী কখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সেবিষয়েও কিছু জানায়নি।

মস্তিষ্কে বিরল রক্তক্ষরণ ও রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার সঙ্গে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না পাওয়ায় জার্মানি, ফ্রান্সসহ ইউরোপের কিছু দেশ স্থগিত হয়ে যাওয়া টিকাদান চলতি সপ্তাহে আবারও শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ১১ মার্চ ডেনমার্ক এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ সাময়িক স্থগিত করে। তারপর থেকে দেশটিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রয়োগ বন্ধ রয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউরোপীয় মেডিসিনস অ্যাজেন্সি (ইএমএ) বলছে, রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার ঝুঁকির চেয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের উপকারিতা বেশি। এছাড়া তদন্তে এই ভ্যাকসিনের সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার পর অন্তত ৩০ জনের রক্ত জমাট বাঁধার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু ইএমএর পরিচালক ইমার কুকি বলেছেন, রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনার সঙ্গে ভ্যাকসিনটির কোনও যোগসূত্র নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করতে পারেননি তারা।

এ বিষয়ে তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি বলেছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা নিরাপদ ও কার্যকর। এই টিকার সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার কোনো সম্পর্ক নেই।

ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। ব্রিটিশ-সুইডিশ এই কোম্পানি বলেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ব্রিটেনে টিকা নেওয়া এক কোটি ৭০ লাখ মানুষের তথ্য বিশ্লেষণে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার ঝুঁকির কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস