নিউ মেক্সিকোর হলোম্যান এয়ার ফোর্স বেস থেকে উড্ডয়ন করছে মার্কিন বিমান বাহিনীর এফ-১৬ ভাইপার। ছবিটি ২০২০ সালের ২৭ জুলাই তোলা

কয়েকমাস ধরে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও অনিশ্চয়তার পর রুশ আক্রমণ মোকাবিলায় পশ্চিমাদের যুদ্ধ ট্যাংক হাতে পেয়েছে ইউক্রেন। তবে এখানেই থেমে নেই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি। ট্যাংক হাতে পাওয়ার পর এখন ইউক্রেনের নজর এখন পশ্চিমাদের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের দিকে।

নিজেরা সোভিয়েত আমলের যুদ্ধবিমান ব্যবহার করলেও ইউক্রেন বলছে, আমেরিকান এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সোভিয়েত যুগের বিমানের চেয়ে ‘চার বা পাঁচ গুণ’ বেশি ভালো। বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের ভীষণ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনীর একজন শীর্ষ কমান্ডার। একইসঙ্গে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানকে তিনি ইউক্রেনের ব্যবহৃত সোভিয়েত যুগের বিমানের চেয়ে ‘চার বা পাঁচ গুণ’ বেশি কার্যকর বলেও উল্লেখ করেছেন।

রয়টার্স বলছে, ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনীর অন্যতম সিনিয়র ওই কমান্ডারের নাম সেরহি হোলুবতসভ। বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলায় মিত্রদেশগুলো কিয়েভকে সোভিয়েত যুগের যে মিগ-২৯ ফাইটার জেট অনুদান দিয়েছে তা বেশ ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’। কিন্তু এসব যুদ্ধবিমান সম্পূর্ণরূপে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য পোল্যান্ড এবং স্লোভাকিয়া সম্প্রতি ইউক্রেনের কাছে মিগ-২৯ ফাইটার জেট হস্তান্তর করতে শুরু করেছে। মূলত রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চল পুনরুদ্ধার করার জন্য ইউক্রেন বহুমুখী পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি নেওয়ায় কিয়েভকে এই যুদ্ধবিমান দিয়েছে দেশটি।

তবে হোলুবতসভ বলছেন, কিছু না পাওয়ার চেয়ে সোভিয়েত যুগের যুদ্ধবিমানগুলো হাতে পাওয়াই ভালো। কিন্তু এসব বিমান রাশিয়ার বিশাল বিমানবাহিনীকে পুরোপুরি প্রতিহত করতে সক্ষম হবে না।

ইউক্রেনের জাতীয় টেলিভিশনে তিনি বলেন, ‘এফ-১৬ এমন একটি বহুমুখী যুদ্ধবিমান যা আকাশে তার কাজের পুরো বৈচিত্র পূরণ করতে পারে। আর দুর্ভাগ্যবশত মিগ-২৯ গত শতাব্দীর (একটি বিমান)।’

গত বুধবার পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ সফর করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে তিনি বলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান সরবরাহকারী পশ্চিমা শক্তিগুলোর মধ্যে একটি ‘জোট’ গঠনে পোল্যান্ড অগ্রণী ভূমিকা নেবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

মূলত এই বছরের শুরুর দিকে ইউক্রেনকে ট্যাংক সরবরাহের জন্য পশ্চিমাদের সমর্থন আদায় করতে সহায়তা করেছিল পোল্যান্ড।

জেলেনস্কির সফরের সময় পোল্যান্ড ইউক্রেনকে আরও ১০টি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। যদিও দেশটি ইতোমধ্যেই ইউক্রেনের কাছে একই মডেলের চারটি জেট হস্তান্তর করেছে।

তবে ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পেতে হলে তা সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের ওপর নির্ভর করতে হবে। কারণ এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রই হচ্ছে অত্যাধুনিক এই যুদ্ধবিমানের বৃহত্তম অপারেটর এবং নির্মাতা।

আর ওয়াশিংটন আপাতত ইউক্রেনে এফ-১৬ জেট পাঠানোর কথা খারিজ করে দিয়েছে।

টিএম