মিয়ানমারে ৩ হাজারেরও বেশি কয়েদিকে মুক্তি দিল জান্তা
বার্মিজ নতুন বছর উপলক্ষে ৩ হাজার ১১৩ জন কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন জান্তা। মুক্ত এই কয়েদিদের মধ্যে ৯৮ জন বিদেশিও আছেন।
সোমবার এক সরকারি বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মিয়ানমারের সামরিক সরকারপন্থী বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে প্রকাশ করা হয়েছে সেই বিবৃতির অনুলিপি।
বিজ্ঞাপন
সামরিক সরকারের গঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য জেনারেল অং লিন ডিউয়ে স্বাক্ষরিত সেই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বার্মিজ নতুন বছরের জনগণের মধ্যে আনন্দ বয়ে আনুক। নতুন বছরের উৎসব ও মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে এই কয়েদিদের মুক্তি দেওয়া হলো।’
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে জেনারেল অং লিন ডিউয়ের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স; কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন সরকারকে উচ্ছেদ করে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। মিয়ানমারের তৎকালীন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং সেই অভুত্থানে নেতৃত্ব দেন। বর্তমানে দেশটিতে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের প্রধানও তিনি।
অভ্যুত্থানের পর বন্দি করা হয় ৭৫ বছর বয়সী অং সান সুচিকে। সেই সঙ্গে কারাগারে পাঠানো হয় সুচির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির হাজার হাজার নেতা-কর্মী-সমর্থককে।
সুচির বিরুদ্ধে দুর্নীতির বেশ কিছু অভিযোগ এনেছে জান্তা। রাজধানী নেইপিদোর একটি সামরিক আদালতে সেসব মামলার বিচার চলছে। কয়েকটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ইতোমধ্যে তাকে ৩৩ বছর কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়েছে। যদি সবগুলো অভিযোগে তিনি দোষী হিসেবে প্রমাণিত হন, সেক্ষেত্রে তার প্রায় দেড়শ’ বছরের সাজা হবে।
এদিকে, অভ্যুত্থানের পর থেকেই সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে মিয়ানমারে। সেই বিক্ষোভ দমন করতে নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও গুলি করছে জান্তা। দেশটির রাজনৈতিক বন্দিদের সহায়াতা প্রদানকারী সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকে এ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীদের গুলিতে মিয়ানমারে মৃত্যুবরণ করেছেন অন্তত ৩ হাজার ২৪০ জন এবং এখনও কারাগারে আছেন কমপক্ষে ১৭ হাজার ৬৪০ জন রাজনৈতিক বন্দি।
এসএমডব্লিউ