ঘুষের বিনিময়ে বাংলাদেশি কর্মী ও পর্যটকদের ভিসা দেওয়ার অভিযোগে ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়া দূতাবাসের দুই কর্মকর্তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়া দূতাবাসের ওই দুই এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি কর্মকর্তাকে রিমান্ডে নেওয়ার তথ্য জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার।

মালয়েশিয়ার দুর্নীতিবিরোধী সংস্থার প্রধান তান শ্রী আজম বাকির বরাত দিয়ে দ্য স্টার বলেছে, ওই দুই কর্মকর্তাকে মালয়েশিয়ায় ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাদের তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, কর্মকর্তাদের রিমান্ডে রাখা হয়েছে এবং মামলাটি এমএসিসি আইনের ধারা ১৭(এ) এবং অর্থ পাচার, সন্ত্রাসবিরোধী অর্থায়ন ও বেআইনি কার্যকলাপ আইনের ধারা ৪(১) এর আওতায় তদন্ত করা হচ্ছে।

দেশটির এই কর্মকর্তা বলেছেন, একই মামলায় দূতাবাসের আরও কয়েকজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি।

সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য স্টার বলেছে, ভিসা সংক্রান্ত সমস্যা এবং বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় পর্যটক ও শ্রমিকদের প্রবেশের বিষয়ে দুর্নীতি তদন্তকারীদের এই দুই কর্মকর্তার সহায়তা প্রয়োজন ছিল।

ওই সূত্র বলেছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ দশমিক ১ মিলিয়ন মালয়েশীয় রিঙ্গিত মূল্যের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই অর্থ ছাড়াও মামলায় জড়িত কর্মকর্তাদের জমির আটটি প্লট জব্দ করা হয়েছে।

তদন্তকারীরা ওই দুই কর্মকর্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

সূত্রটি বলেছে, এ কারণে তাদের মালয়েশিয়ায় ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে; যাতে তারা এসব অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে পারেন। ভিসা দুর্নীতির এই মামলায় জড়িতদের ২০টির বেশি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। 

তবে সন্দেহভাজন দুই কর্মকর্তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে কি না তা এখনও জানা যায়নি।

সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, মালয়েশিয়ার শ্রম বিভাগ দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় গত আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৮৯২ জন বাংলাদেশি কর্মীকে নতুন করে নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ৩৪ হাজার ৫৯৫ জন বাংলাদেশি কর্মী ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছেন।

বাকি ২ লাখ ২৫ হাজার কর্মীর দেশটিতে যাওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে মালয়েশিয়ায় প্রায় ৫ লাখ নতুন বাংলাদেশি কর্মীর নিয়োগ হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ হাইকমিশন।

চলতি বছরের মার্চে সৌদি আরব ভিসা কেলেঙ্কারির অভিযোগে তাদের ঢাকা দূতাবাসের সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে।

সূত্র: দ্য স্টার মালয়েশিয়া।

এসএস