জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ছবি : এপি

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের ওপর সরকার ও প্রভাবশালীদের যে দমন-পীড়ন চলছে— তা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

বুধবার বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বার্তায় জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘সাংবাদিকরা যখন সত্যের পক্ষে দাঁড়ান, গোটা বিশ্ব তখন তাদের পক্ষে অবস্থান নেয়।’

‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হলো গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের ভিত্তি। ক্ষমতার সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনা এবং ক্ষমতাসংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুতে মতামত গঠনের যাবতীয় রসদ সরবরাহের পাশাপাশি মানবাধিকারের প্রাণশক্তিও যোগায় সংবাদমাধ্যম। কিন্তু বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে আজ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আক্রমণের মুখে।’

‘তার ফলে সত্য আজ হুমকির মুখে এবং সংবাদের নামে ভুয়া তথ্য ও ঘৃণামূলক বক্তব্যে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে চারদিক।’

কী কারণে বিশ্বজুড়ে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা বার বার ক্ষুণ্ন হচ্ছে, বিবৃতিতে তারও ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন আন্তোনিও গুতেরেস। বিবৃতিতে এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা দু’টি— প্রথমত, বিশ্বের প্রায় সব দেশে মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির নিয়ন্ত্রণ আছে অল্প গুটিকয় মানুষের হাতে এবং দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে প্রণয়ন করা বিভিন্ন আইন— যা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার গলা চেপে ধরার জন্যই তৈরি করা হয়।’

এ ছাড়াও সম্প্রতি অনলাইনে সাংবাদিকদের হয়রানি, ভয়-ভীতি প্রদর্শন দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে গুতেরেস বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, যারা সত্য বলে— তাদেরকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা বন্ধ করুন। সাংবাদিকদের তাদের দায়িত্ব পালন করতে দিন। যাবতীয় হয়রানি ও দমনমূলক আইন বাতিল করুন।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাসহ বৈশ্বিক বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে নিহত হয়েছেন ৬৭ জন সংবাদকর্মী। শতকরা হিসেবে এই সংখ্যা আগের বছর ২০২১ সালের চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি।

এছাড়া বর্তমান বিশ্বে যত নারী সাংবাদিক কাছেন, তাদের প্রতি চারজনে একজন গত বছর অনলাইনে ভয়ভীতি, হুমকি ও যৌন আক্রমণের শিকার হয়েছেন।

এসএমডব্লিউ