অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। রোববার (১৪ এপ্রিল) দুপুরের পর রাখাইনে আঘাত হানে এটি।

মোখার আঘাতে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে আশঙ্কা করা হলেও সেরকম কিছু হয়নি। তবে পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারের উপকূলীয় অঞ্চল রাখাইনে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে শক্তিশালী এ ঘূর্ণিঝড়টি।

মোখা আঘাত হেনে দুর্বল হয়ে যাওয়ার পর রাজ্যের বিভিন্ন স্থানের ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র ওঠে আসছে।

সোমবার (১৫ মে) মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাখাইনের রাজধানী সিট্যুয়ে, ম্রুক-ইউ, কায়ুকত্য এবং মিনবায়া শহর।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন সংবাদমাধ্যম মায়াবতী চ্যানেল জানিয়েছে, মোখার আঘাতে পুরো দেশে ৮৮৪টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে ৫৮৮টি রাখাইনের। এই রাখাইনেই ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে দু’জনের মৃত্যুর কথা শোনা গেছে। তৃতীয় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে আয়াবতী রাজ্যে।

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, কায়ুকত্য শহরের ৯০ শতাংশ ঘর-বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। এটি রাজধানী সিট্যুয়ে থেকে ৬০ মাইল উত্তরে অবস্থিত। এছাড়া গৃহযুদ্ধের কারণে বাস্তুহারা মানুষদের জন্য তৈরি তিনটি আশ্রয়কেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলোতে ১ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ বসবাস করেন।

কায়ুকত্য যুব অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান কেও সো লিন বলেছেন, কালাদান নদীর পাশে অবস্থিত এ শহরটির অল্প কিছু বাড়িই অক্ষত রয়েছে।

ম্রুক-ইউ বিভাগের ইয়ুক চুং গ্রামেরও বেশিরভাগ বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানে প্রায় ৩০০টি বাড়ি ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ে কেউ গুরতর আহত বা নিহত হননি।

অপরদিকে না সুয়েল গ্রামের ৮০টি বাড়ির সবগুলোই ধ্বংস হয়েছে। যার মধ্যে একটি মঠ এবং কমিউনিটি হলও রয়েছে।

রাখাইনের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কায়ুকত্য শহরে সোমবারও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা পুনর্স্থাপন করা যায়নি। ফলে সেখানকার আসল চিত্র সম্পর্কে এখনো পুরোপুরি ধারণা নিতে পারেননি সরকারি কর্মকর্তারা।

রোববার স্থলে আঘাত হানার পর ঘূর্ণিঝড়টি সোমবার চিন এবং ম্যাগওয়ে রাজ্যে প্রবেশ করে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ওই অঞ্চলগুলোতে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। যার কারণে অনেক এলাকায় ভূমিধসের শঙ্কা দেখা দেয়।

সূত্র: মিয়ানমার নাউ

এমটিআই