চলতি মাসেই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব পদে যোগ দেবেন অ্যাগনেস ক্ল্যামার্দ

সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক ও সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে নিযুক্ত জাতিসংঘের তদন্ত কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা এ হুমকি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে ২০১৮ সালের অক্টোবরে জামাল খাশোগিকে হত্যার ঘটনা তদন্তে নিযুক্ত বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা অ্যাগনেস ক্ল্যামার্দকে হত্যার হুমকি দেন সৌদি আরবের এক কর্মকর্তা। খাশোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর তাকে এই হুমকি দেওয়া হয়। 

অ্যাগনেস ক্ল্যামার্দ হচ্ছেন ফ্রান্সের নাগরিক এবং মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ। চলতি মাসেই মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব পদে যোগ দেবেন তিনি।

দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ২০২০ সালে জানুয়ারি মাসে জাতিসংঘের এক সহকর্মী তাকে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে হত্যার হুমকির বিষয়ে সতর্ক করেন। জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তা বলেছিলেন, সৌদি আরবের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা দুইবার ক্ল্যামার্দকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন।

ওই সৌদি কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘জাতিসংঘ যদি তার (অ্যাগনেস ক্ল্যামার্দ) লাগাম টেনে না ধরে তাহলে তারাই তার বিষয়টি দেখবেন।’

সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত জামাল খাসোগিকে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে হত্যা করা হয়। সৌদি আরব শুরুতে খাশোগিকে হত্যার কথা অস্বীকার করলেও পরে চাপের মুখে দেশটির সরকার ‌‘কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তা’ খাশোগিকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করে।

এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও দেশটির প্রকৃত নেতা মোহাম্মদ বিন সালমান নির্বাসিত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে ‘আটক নয়তো তাকে হত্যার’ অনুমোদন দিয়েছিলেন বলে এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সব ধরনের গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে খাসোগিকে আটক বা হত্যা করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অভিযান চালানোর অনুমোদন দেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।’

তবে যুবরাজ সালমান শুরু থেকে এই হত্যায় তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক ছিলেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। ২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে দেশটির এজেন্টদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি। নিজের বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তুলতে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। ৫৯ বছর বয়সী এই সাংবাদিক ছিলেন সৌদি সরকারের বিভিন্ন নীতি ও রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

টিএম