উপমহাদেশের বিতর্কিত ভৌগলিক অঞ্চল জম্মু-কাশ্মিরের ভারত নিয়ন্ত্রিত অংশে আয়োচিত জি-২০ সম্মেলন বয়কটের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে এই অঞ্চলের পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত অংশে। সোমবার পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে শত শত মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

এদিকে, সোমবারই কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক জোট জি ২০ সম্মেলন শুরু হয়েছে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগরে, যা চলবে আগামী বুধবার পর্যন্ত। পাকিস্তানের ঘনিষ্ট মিত্র বলে পরিচিত চীন এবং সৌদি আরব ইতোমধ্যে এই সম্মেলন বর্জন করেছে।

কাশ্মিরের পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত অংশকে ইতোমধ্যে কেন্দ্রশাসিত বিশেষ অঞ্চলের মর্যাদা দিয়েছে দেশটি। সেখানকার রাজ্য প্রশাসনের কর্মকর্তা রাজা আজহার ইকবাল রয়টার্সকে জানান, সোমবার সকালে শত শত মানুষ জি-২০ সম্মেলন বয়কটের ডাক দিয়ে মিছিল করেছেন। এ সময় তারা স্লোগান দিচ্ছিলেন— ভারত পিছু হটো/ জি ২০ বয়কট বয়কট…।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি সোমবার তাদের অংশের কাশ্মিরের আইনসভায় এই সম্মেলন আয়োজনের কঠোর সমালোচনা করে বক্তব্য দিয়েছেন। নিজ বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ভারত অন্যায়ভাবে কাশ্মির দখল করেছে এবং সেই দখলকে ন্যায্যতা দিতে জি ২০ জোটের অপব্যবহার করছে। আমরা বিশ্ববাসীর বিবেকের কাছে ভারতের এই পদক্ষেপের বিচার চাইছি।’

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ব্রিটিশ ঔপনিবেশি শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই কাশ্মিরের দখলদারিত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান, তার পরের দিন ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু স্বাধীনতা লাভের আগেই জম্মু-কাশ্মিরের এক তৃতীয়াংশ এলাকা পাকিস্তান দখল করে নিয়েছিল, যা পরে আজাদ কাশ্মির নামে পরিচিতি পায়।

বাকি যে দুই তৃতীয়াংশ এলাকা ভারতের দখলে ছিল— সেটির দখল পেতে গত ৭৫ বছরে ভারতের সঙ্গে একাধিকবার যুদ্ধে জড়িয়েছে পাকিস্তান। সেসব যুদ্ধে সফল না হলেও ভারতের সংবিধানে ‘বিশেষ রাজ্য’ হিসেবে কাশ্মিরের স্বীকৃতি থাকায় এই ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের চুড়ান্ত অবনতি কখনও হয়নি।

অবশেষে ২০১৯ সালে পার্লামেন্টে গণভোট আয়োজনের মাধ্যমে কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে বিজেপি। তারপর থেকে দুই দেশের মধ্যে পরস্পরের প্রতি চরম বৈরী মনোভাব কাজ করছে।

এসএমডব্লিউ