গ্রামে বাইরের মানুষ প্রবেশ নিষিদ্ধ। কেউ যদি প্রবেশ করে তার সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলেন না কেউ। শুধু তাই নয়, ঋতুস্রাবের সময় গ্রামের বাইরে অবস্থিত বাড়িতেই দিনরাত ‘বন্দি’ থাকতে বাধ্য করা হয় নারীদের।

এখানেই শেষ নয়। জুতো পরাও নিষিদ্ধ এই গ্রামে। আর এসবই নাকি করা হয় উপরওয়ালাকে শ্রদ্ধা জানাতে! এমনই এক গ্রাম রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি জেলায়। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্রে জানা যাচ্ছে এমনই এক গ্রামের কথা।

তিরুপতি জেলার অন্তর্গত ভেমনগরী ইন্দলু নামের ওই গ্রামের বাসিন্দারা নাকি বাইরে তৈরি খাবারও খান না। কোথাও গেলে পানি ও খাবার সঙ্গে রাখেন। এমনকী কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লেও চিকিৎসা করানো হয় গ্রামেরই চিকিৎসকদের দিয়ে, বাইরে কোথাও চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় না।

আর এ সবই করা হয় একটাই কারণে। এলাকাটা অনগ্রসর সম্প্রদায়ের মানুষদের। তাই তারা বহিরাগতদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখতে নারাজ। বাইরে থেকে কেউ এখানে এলে তাদের স্পর্শ থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে চলেন গ্রামবাসীরা। বাইরে থেকে গ্রামে প্রবেশকারীকে গ্রামের বাইরেই তার জুতা-চপ্পল খুলে আসতে হয়। এমনকি এই গ্রামের কোনো সদস্য কোভিড টিকা পর্যন্ত নেননি!

জানা যায়, তিরুপতি জেলার এই গ্রামে প্রায় ২৫টি পরিবার বাস করে, যেখানে গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় ১২০। তাদের মধ্যে ভোট দেন ৭০ জনের কাছাকাছি মানুষ। এখানকার গ্রামবাসী নিজেদের পালভেকরি বর্ণের বলে মনে করেন। এটি একটি অনগ্রসর শ্রেণি। তারা নিজেদের বাইরে কারও সঙ্গেই মেলামেশা করতে চান না। কিন্তু কেন?

আসলে এর পেছনে রয়েছে এক দীর্ঘদিনের প্রথা ও ঐতিহ্য। ভগবান ভেঙ্কটেশ্বর স্বামীর এক পাথরের বিগ্রহ রয়েছে এখানে। লক্ষ্মী, নরসিংহ স্বামী এবং দেবী গঙ্গাম্মার পুজোও করেন তারা। এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘এখানে ভগবান ভেঙ্কটেশ্বর থাকেন। তাই এই গ্রামে জুতো পরে প্রবেশ নিষেধ। মন্দিরে কেউ কি জুতো পরে প্রবেশ করেন? আমরা এই গ্রামকে মন্দির বলেই মনে করি।’

তথ্যসূত্র : সংবাদ সারাদিন

এসএম