আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রোববার (২৮ মে) নয়া দিল্লিতে পূজা-আর্চনা ও ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে এটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন তিনি।

তবে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন বয়কট করেছে দেশটির বেশিরভাগ বিরোধী দল। কারণ তারা চেয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী মোদির বদলে প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু এটির উদ্বোধন করবেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, মোদি সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে নতুন সংসদে আসেন। এরপর লোকসভার স্পিকার ওম বিরলাকে নিয়ে পূজায় বসেন তিনি। পূজা শেষে ‘সেঙ্গল’ নামের একটি ‘রাজদণ্ডের’ সামনে মাথা নত করেন তিনি।

সিঙ্গল হাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

অধিনাম সিয়ার্সরা সেনগোলটি প্রথমে মোদির হাতে তুলে দেন। এরপর তিনি সেটি স্পিকারের আসনের পাশে রাখেন।

এরপর নতুন এ সংসদ ভবনটি তৈরিতে যেসব নির্মাণ শ্রমিক অংশ নিয়েছিলেন তাদের অভিনন্দন জানান মোদি। এর আগে সব ধর্মের প্রতিনিধিরা নিজ নিজ ধর্মের প্রার্থনা করেন।

এর আগে নিজ বাড়িতে অধিনামদের বরণ করে নেন মোদি

কী সুবিধা আছে নতুন সংসদ ভবনে?

ভারতের পুরোনো সংসদ ভবনটি ১৯২৭ সালে তৈরি করা হয়েছিল। ৯৬ বছর আগে তৈরিকৃত ভবনটি, আধুনিক সময়ের যেসব প্রয়োজনীয়তা রয়েছে সেগুলো পূরণ করতে পারছিল না।

নতুন সংসদ ভবনের লোকসভা চেম্বারে অনায়াসে ৮৮৮ জন সদস্য বসতে পারবেন। আর রাজ্যসভা চেম্বারে বসতে পারবেন ৩০০ সদস্য। সংসদের দুই কক্ষই যদি একসঙ্গে বসতে চায় তাহলে লোকসভা চেম্বারেই ১ হাজার ২৮০ সদস্যের জায়গা হয়ে যাবে।

নতুন ভবনটি তৈরিতে যেসব নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনা হয়েছে। ভবনে ব্যবহৃত সেগুন কাঠ সংগ্রহ করা হয়েছে মহারাষ্ট্রের নাগপুর থেকে। লাল ও সাদা বেলেপাথর আনা হয়েছে রাজস্থানের সর্মথুরা থেকে।

সংসদের কার্পেট এসেছে উত্তর প্রদেশের মির্জাপুর থেকে। বাঁশের মেঝে আনা হয়েছে ত্রিপুরা আর খোদাইকৃত পাথর নিয়ে আসা হয়েছে রাজস্থান থেকে। ভবনটিতে ভারতের বিভিন্ন ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া সংসদ ভবনটির স্মৃতি সমুন্নত রাখতে ৭৫ রুপির বিশেষ কয়েনও বাজারে ছেড়েছে ভারতের সরকার।

টাটা প্রজেক্ট লিমিটেডের তৈরিকৃত এ সংসদে একটি বিশাল কনসটিটিউশন হল রয়েছে। যেখানে ভারতের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ভবনটির ভেতর এমপিদের জন্য একটি লাউঞ্জ, লাইব্রেরী, একাধিক কমিটি রুম, ডাইনিং ও বিশালাকার পার্কিং এরিয়া রয়েছে।

ত্রিকোণাবিশিষ্ট চার তলা ভবনটি তৈরি করা হয়েছে ৬৪ হাজার ৫০০ স্কয়ার কিলোমিটার জায়গাজুড়ে। ভবনটিতে প্রবেশের জন্য জ্ঞান, শক্তি এবং কর্ম নামের ৩টি দরজা রয়েছে।

সূত্র:  এনডিটিভি

এমটিআই