কোভ্যাক্স ইনিশিয়েটিভসের জন্য জরুরিভিত্তিতে ১ কোটি ডোজ করোনার টিকা চেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রয়োজনের কথা জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘চলতি বছরের শুরুর দিকে বেশ কয়েকটি দেশ এবং টিকা প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল আমার। আমি তাদের জানিয়েছিলাম, বছরের প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে বিশ্বের সবগুলো দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করার লক্ষ্য নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তারা তখন (সহযোগিতা করতে) সম্মতিও দিয়েছিল।’

‘সেই সময়সীমা শেষ হতে বাকি আছে আর মাত্র ১৫ দিন; কিন্তু এখনও ৩৬ টি দেশ এই কর্মসূচি শুরু করতে পারেনি; এবং তার একমাত্র কারণ তাদের কাছে কোনো কোম্পানির করোনা টিকার একটি ডোজও নেই।’

গেব্রিয়েসুস জানান, আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে এই ৩৬টি দেশের মধ্যে ১৬টি আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে করোনা টিকার ডোজ পাবে, ফলে এপ্রিলের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতেই গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে পারবে ওই দেশগুলো; কিন্তু বাকি ২০ টিতে কবে নাগাদ টিকার ডোজ পৌঁছাবে তা এখনও নিশ্চিত নয়।

বিশ্বের দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর করোনা টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে টিকা বিতরণকারী আন্তর্জাতিক জোট গ্যাভি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের সঙ্গে যৌথভাবে ‘কোভ্যাক্স ইনিশিয়েটিভস’ নামের একটি প্রকল্প পরিচালনা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ২০২০ সালে জাতিসংঘের সমর্থনে শুরু হয়েছে এই প্রকল্প।

গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘কোভ্যাক্স প্রকল্পের আওতায় আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে এই ২০ টি দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে জরুরিভিত্তিতে আমাদের ১ কোটি করোনা টিকার ডোজ প্রয়োজন। এটি খুব বড় কোনো চাওয়া নয়, ২০ টি দেশে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনার জন্য এই পরিমাণ ডোজ যথেষ্টও নয়, আমরা শুধু চাই, দেশগুলো যেন অন্তত কর্মসূচি শুরু করতে পারে।’

চলতি বছর কোভ্যাক্সের আওতায় বিশ্বজুড়ে দুইশ কোটি করোনা টিকার ডোজ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কিন্তু পর্যাপ্ত টিকার ডোজের অভাবে সেই লক্ষ্যমাত্রা সফল হবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে ইতোমধ্যে।

এজন্য উন্নত দেশগুলোর অতিরিক্ত পরিমাণ করোনা টিকার ডোজ মজুত করার প্রবণতাকে দায়ী করেছে ডব্লিউএইচও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক গেব্রিয়েসুস উন্নত দেশগুলোর এই প্রবণতাকে সমালোচনা করে এর আগে বলেছিলেন, উন্নত দেশগুলো তাদের নৈতিকতার শেষ সীমায় পৌঁছেছে।

সূত্র: আল জাজিরা

এসএমডব্লিউ