ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা সিকিউরিটি সার্ভিস অব ইউক্রেন (এসবিইউ) দাবি করেছে, রাশিয়ার দুই ব্যক্তির একটি ফোনালাপে আড়ি পেতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন তারা।

ওই ফোনালাপে তাদের একজন স্বীকার করেছেন গত ৬ জুন খেরসনের নোভা কাখোভকা বাঁধে যে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেটি রাশিয়ার একটি ‘নাশকতাকারী দল’ করেছে।

দুই সেনার মধ্যে ফোনে কি কি কথা হয়েছে সেটিও প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

ওই দুই সেনার মধ্যে কথাবার্তা শুরু হয়েছে এই বলে— ‘খবর। গতকাল টেলিগ্রাম চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। একজন সেনা দাঁড়িয়ে ছিল। তার মুখ ঢাকা ছিল, সেনা পোশাক পরা। সে বলছে এখানে কোনো বন্যা নেই। মানুষ সাধারণ জীবন-যাপন করছে। আর তার পেছনে একটি জানালা আছে। আপনি দেখতে পারবেন হাঁটু সমান পানি।’

দ্বিতীয় ব্যক্তিটিকে বলতে শোনা যায়— ‘হাস্যকর। এটি কি হাইড্রোলিক পাওয়ার প্ল্যান্ট ধ্বংসের বিষয়?’

তাদের মধ্যে কথাবার্তা চলতে থাকে…

প্রথম জন: ‘হ্যাঁ। প্রধান সমস্যা হলো, হাইড্রোলিক পাওয়ার প্ল্যান্ট তাদের পারমাণবিক চুল্লি ঠান্ডা রাখে।’

দ্বিতীয় জন: ‘ভালো। এটি (বাঁধ ধ্বংস) তারাই (ইউক্রেনীয়রা) করেছে। এটি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’

প্রথম জন: ‘আমাদের লোকেরা এটি করেছে। তারা না। এটি আমাদের লোক।’

দ্বিতীয় জন: ‘সত্যি? তারা আমাদের লোক? কিন্তু শুনেছি খোকলসরা (ইউক্রেনীয়দের অবমাননাকর নাম) এটি উড়িয়ে দিয়েছে।’

প্রথম জন: ‘তারা উড়িয়ে দেয়নি। আমাদের নাশকতাকারী দল সেখানে রয়েছে। তারা এই বাঁধ দিয়ে ভীতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। তবে বিষয়টি পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়নি। যেমনটা পরিকল্পনা করা হয়েছিল  তার চেয়ে বেশি।’

দ্বিতীয় জন: ‘হ্যাঁ, ঠিক, এটি আরেকটি চেরনবিল হতে যাচ্ছে? ঠিক?’

প্রথম জন: ‘১৯৫০ সালে তৈরি করা হয়েছিল। এটি দ্রুত ধ্বংস হয়েছে। এটি ধ্বংস হয়েছে।’

বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা বিস্তারিত কিছু জানায়নি। ওই ফোনালাপটি কোন দুই ব্যক্তির সেটিও জানায়নি তারা। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা এখন যুদ্ধাপরাধ এবং পরিবেশ ধ্বংসের বিষয়টির তদন্ত করছে।

বিবৃতিতে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা বলেছে, ‘দখলদাররা বাঁধ ধ্বংস করে ইউক্রেনকে ব্ল্যাকমেইল এবং দেশের দক্ষিণ দিকে মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ তৈরি করতে চেয়েছে।’

এদিকে বাঁধটি ধ্বংসের পর রাশিয়া এবং ইউক্রেন একে-অপরকে দায়ী করেছে। তবে ইউক্রেনের মিত্রদেশগুলো দাবি করেছে, রুশ বাহিনী ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ রুখতে ইচ্ছেকৃতভাবে এ বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

এমটিআই