রাশিয়ার সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা ফের উড়িয়ে দিলেন জেলেনস্কি
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যেসব সমস্যা— শান্তিপূর্ণ উপায়ে সেসব সমাধানে মস্কোর সঙ্গে সংলাপের প্রস্তাব ফের বাতিল করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার মতে, এই সংলাপ ইউক্রেনের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনবে না।
শুক্রবার রাজধানী কিয়েভে আফ্রিকা মহাদেশভুক্ত দেশগুলোর জোট আফ্রিকান ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি এর আগেও বহুবার বলেছি এবং আজ আবারও বলছি যে, রুশ দখলদার বাহিনী এখনও আমাদের ভূখণ্ডে রয়েছে এবং এখন মস্কোর সঙ্গে সংলাপের অর্থ হলো এখানে চলমান সংঘাত, যন্ত্রণা এবং ভোগান্তিকে আরও দীর্ঘমেয়াদী ও স্থায়ী করা।’
বিজ্ঞাপন
রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের অবসান এবং প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যকার যাবতীয় সমস্যা ও মতপার্থক্য সংলাপের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের প্রস্তাব নিয়ে ইউক্রেন সফরে গিয়েছেন আফ্রিকান ইউনিয়নের নেতারা। তাদের এই সফরের মূল লক্ষ্য— শান্তি সংলাপে বসতে দু’পক্ষকে রাজি করানো। শুক্রবার এই ইস্যুতেই ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন আফ্রিকার নেতারা।
তবে সেই বৈঠক থেকে যে আশাব্যাঞ্জক কিছু উঠে আসেনি— তা জেলেনস্কির বক্তব্যে স্পষ্ট। এর আগে গত বছর অক্টোবরে একটি ডিক্রি জারি করেছিলেন তিনি। সেখানে বলা হয়েছিল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কোনো ভাবেই কোনো আলোচনায় বসবেন না জেলেনস্কি। শুক্রবারও কার্যত সেই অবস্থানই স্মরণ করিয়ে দিলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মতে, এক মিনস্ক চুক্তি নিয়ে মস্কো বছরের পর বছর ধরে বিশ্বের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে এবং যদি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে কিয়েভ-মস্কোর মধ্যে সংলাপ শুরু হয়, তার পরিণতিও একই হবে।
‘আমাদের ভূখণ্ড থেকে অবশ্যই রুশ বাহিনীকে বেরিয়ে যেতে হবে এবং একমাত্র তখনই মস্কোর সঙ্গে আমাদের সংলাপ হতে পারে,’ সংবাদ সম্মেলনে বলেন জেলেনস্কি।
ইউক্রেনে বসবাসরত রুশ ও ইউক্রেনীয়দের মধ্যকার জাতিগত সংঘাত এবং কিয়েভের যুক্তরাষ্ট্রঘেঁষা নীতির কারণে প্রতিবেশী এই দেশটির সঙ্গে কখনও তেমন সুসম্পর্ক ছিল না রাশিয়ার। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের রুশ বিদ্রোহীদের সহায়তায় ক্রিমিয়া উপদ্বীপ রাশিয়ার দখলে চলে যাওয়ার পর আরও তিক্ত হয় দু’দেশের সম্পর্ক।
২০১৫ সালে জার্মানির তৎকালীন চ্যান্সেলর অ্যানজেলা মের্কেল ও ফ্রান্সের ফ্রাঙ্কোইস হোলান্ডের মধ্যস্থতায় বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ‘মিনস্ক চুক্তি’। এই চুক্তির প্রধান শর্ত ছিল— ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে ইউক্রেনকে।
কিন্তু গত বছর অ্যানজেলা মের্কেল জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে সামরিকভাবে সমৃদ্ধ করতে কয়েক বছর সময় প্রয়োজন ছিল ন্যাটোর। সেজন্যই কালক্ষেপণের উদ্দেশ্যে এই চুক্তি প্রস্তুত করা হয়েছিল। ফ্রাঙ্কোইস হোলান্ডও অ্যানজেলার এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন।
অ্যানজেলা মের্কেলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ব্যক্তিগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে পুতিনের। কিন্তু গত বছর তার এই স্বীকারোক্তির পর হতাশা জানিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, বার্লিন ও প্যারিসের নিরপেক্ষতা নিয়ে বছরের পর বছর ভ্রান্তিতে ছিলেন তিনি।
সূত্র : আরটি
এসএমডব্লিউ