বিদ্রোহের পর প্রথম ভিডিওবার্তা
আগের অবস্থান থেকে ঘুরে গেলেন প্রিগোজিন
পিএমসি ওয়াগনারের শীর্ষ কমান্ডার ইয়েভগেনি প্রিগোজিন
ইউক্রেনে যুদ্ধরত রুশ বাহিনীর প্রধান সহযোগী পিএনসি ওয়াগনারের শীর্ষ কমান্ডার ইয়েভগেনি প্রিগোজিন তার বিদ্রোহের সময়কার অবস্থান থেকে প্রায় ১৮০ ডিগ্রি সরে এসে দাবি করেছেন, তাদের মস্কো অভিমুখে পদযাত্রার উদ্দেশ্য ছিল প্রতিবাদ, সরকারের উচ্ছেদ নয়।
সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিওবার্তায় এই দাবি করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একসময়ের ঘনিষ্ট প্রিগোজিন। শুক্রবার ইউক্রেনে অভিযানরত রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে তথাকথিত বিদ্রোহের পর এই প্রথম কোনো ভিডিওবার্তা দিলেন ওয়াগনারপ্রধান।
বিজ্ঞাপন
১১ মিনিটের সেই ভিডিওবার্তায় প্রিগোজিন বলেন, ‘মস্কো অভিমুখে যাত্রার মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রতিবাদ জানান দিতে চেয়েছিলাম। সরকার উৎখাতের কোনো পরিকল্পনা আমাদের ছিল না।’
‘ওয়াগনারের ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঠেকানোই আমাদের লক্ষ্য ছিল। সেইসঙ্গে রুশ বাহিনীর যেসব কর্মকর্তা অপেশাদার পদক্ষেপের মাধ্যমে বড় বড় ভুল করেছেন, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে চেয়েছিলাম,’ ভিডিও বার্তায় বলেন প্রিগোজিন।
বিজ্ঞাপন
রাশিয়ার সাধারণ জনগণ তাদের এই ‘প্রতিবাদী’ পদযাত্রাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন দাবি করে ওয়াগনারপ্রধান বলেন, ‘যাত্রাপথে রাশিয়ার যেসব শহর আমরা পেরিয়েছি, সেখানকার জনগণ আমাদের আগমনে খুশি হয়ে উঠেছিলেন। অনেকেই রাশিয়ার পতাকা ও ওয়াগিনারের নিশান নিয়ে আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন।’
রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে পিএনসি ওয়াগনারের যোদ্ধাদের হত্যা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের যাবতীয় কৃতিত্ব ‘ছিনতাইয়ের’ অভিযোগ তুলে ২৩ জুন (শুক্রবার) রাশিয়ার সেনাবাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঘোষণা দিয়েছিলেন ওয়াগনারপ্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন।
পরের দিন শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বার্তায় প্রিগোজিন বলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভকে উৎখাত করে ওয়াগানার গ্রুপের ২৫ হাজার সেনা নিয়ে তিনি মস্কোর পথে রওনা হয়েছেন।
তবে শেষ পর্যন্ত মস্কোতে ঢুকতে পারেননি ওয়াগনার যোদ্ধারা। ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী রুশ শহর রোস্তভেই থেমে যায় তাদের পদযাত্রা। পরে সাধারণ ক্ষমার আওতায় তাদের সবাইকে ফের নিজ নিজ ঘাঁটিতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
তাদের দলনেতা ও ওয়াগনারপ্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন আর যুদ্ধেক্ষেত্রে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। শিগগিরই একটি চুক্তির আওতায় তাকে বেলারুশ পাঠানো হবে বলে জানা যায়। ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো নিজে এই চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছেন। সর্বশেষ রোববার রোস্তভ শহরে একটি এসইউভি গাড়িতে দেখা গিয়েছিল প্রিগোজিনকে।
সোমবারের ভিডিওবার্তায় অবশ্য প্রিগোজিন দাবি করেছেন, তার বাহিনীর যোদ্ধারা গত শনিবার মস্কোর ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন,ওয়াগনার যোদ্ধারা মস্কোর দিকে এগোনোর সময় পথে থাকা সব সামরিক স্থাপনা ও বিমানঘাঁটিগুলো অবরুদ্ধ করেছিলেন।
তবে বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন, সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য সোমবারের ভিডিওবার্তায় দেননি ওয়াগনারপ্রধান।
সূত্র : বিবিসি
এসএমডব্লিউ