লেবাননের সংসদের প্রভাবশালী স্পিকার নাবিহ বেরি

‌সরকার গঠন করতে না পারলে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে থাকা লেবানন টাইটানিকের মতো ডুবে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সংসদের প্রভাবশালী স্পিকার নাবিহ বেরি। আরও দুই মাসের বেশি সময়ের জন্য সরকার গঠনের শেষ আলো জ্বালিয়ে রাখতে জরুরি তহবিলের অনুমোদন দিতে সোমবার পার্লামেন্টের অধিবেশনে এই মন্তব্য করেন তিনি।

বেরি বলেন, ‌‘সারাদেশ বিপদে আছে, সারাদেশ এখন একটি টাইটানিক জাহাজ। এটাই জেগে ওঠার সময়। কারণ জাহাজ ডুবে গেলে শেষ পর্যন্ত কেউই রক্ষা পাবেন না।’

পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটি ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে। যা লেবাননের ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সালের গৃহযুদ্ধের পর দেশটির স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি তৈরি করেছে।

লেবাননে বিদেশি সহায়তা ঘিরে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে তা কাটাতে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে নতুন সরকার দরকার। কিন্তু সঙ্কট উত্তরণে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী সাদ আল-হারিরি এবং প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের দ্বন্দ্ব চলছে।

সঙ্কটের অবসান দাবিতে রাজধানী বৈরুতে জাতীয় পতাকা হাতে বিক্ষোভে অংশ নেন এক নারী

চলতি মাসের শেষের দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের তহবিল ফুরিয়ে যেতে পারে বলে দেশটির জ্বালানি মন্ত্রী সতর্ক করে দেওয়ার পর লেবাননের সরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিকে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি তহবিলের অনুমোদন দিয়েছে পার্লামেন্ট।

দেশটির সাবেক জ্বালানি মন্ত্রী এবং বর্তমান সংসদ সদস্য সিজার আবি খলিল বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, দুই অথবা আড়াই মাস বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় বহনের জন্য এই অর্থ যথেষ্ট। লেবাননের চারটি প্রধান বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানির অন্যতম একটি জাহরানি পাওয়ার প্ল্যান্ট। জ্বালানির অভাবে ইতোমধ্যে এই কোম্পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।

আবি খলিল বলেন, এ ধরনের বড় কোম্পানির বন্ধ হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এর অর্থ হলো লেবাননের নাগরিকদের এখন জেনারেটরের ওপর নির্ভর করতে হবে; যা ডিজেলের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। আর এতে ৩০ শতাংশ বেশি ব্যয় হবে।

লেবানন ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ঘাটতিতে রয়েছে। দেশটির বাসা-বাড়ি, দোকান-পাট বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে দিনের বেশিরভাগ সময় অন্ধকারেই থাকছে। এর ফলে অনেকেই বেসরকারি জেনারেটরের ওপর নির্ভর করছেন।

এসএস