ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশায় করমন্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনার দেড় মাস পার হলেও এখনো স্বাভাবিক হয়নি ওই অঞ্চলের ট্রেন চলাচল। একের পর এক শিডিউল বিপর্যয়ে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।

আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, ওড়িশায় করমন্ডল এক্সপ্রেসের সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার পরে ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব রেলে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় খুব বাজে পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে। মিনিট বা ঘণ্টা নয় কখনও কখনও এ শিডিউল বিপর্যয়ে বদলে যাচ্ছে দিন-তারিখ।

যাত্রীরা বলছেন, দুপুর তিনটার ট্রেন ছাড়ছে রাত ২টার দিকে, কখনও রাত ৮টার ট্রেন ছাড়ছে পরের দিন সকালে। রাত সাড়ে ১১টায় গন্তব্যে পৌঁছনোর কথা যে ট্রেনের, তা পৌঁছাচ্ছে কখনও রাত দেড়টায়, কখনো রাত ২টায়। বাধ্য হয়ে যাত্রীদের অনেককে স্টেশনে রাত কাটাতে হচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা।

করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা

করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার ৫১ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন, সপ্তাহখানেকের মধ্যে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে। যার প্রতিফলন একটুও দেখা যায়নি।

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় নিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, গত সোমবার নির্ধারিত সময় দুপুর ৩টা ২০ মিনিটের বদলে করমন্ডল এক্সপ্রেস শালিমার স্টেশন ছেড়েছে রাত ২টায়। ওই দিনই রাত ১০টা ১০-এ হাওড়া থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল আজাদ হিন্দএক্সপ্রেসের। সেটি ছেড়েছে মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায়। ফলকনুমা, ইস্ট-কোস্ট, হাওড়া-যশোবন্তপুর, হাওড়া-বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেস, হাওড়া-মুম্বই মেইলের মতো সব ট্রেন অন্তত দুইথেকে আড়াই ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে।

বিশেষত চেন্নাই এবং বেঙ্গালুরগামী ট্রেনগুলোর মাত্রাতিরিক্ত দেরির কারণে অনেকেই চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্টের দিন এবং সময় হারাচ্ছেন।

জানা যায়, ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব রেলেও রক্ষণাবেক্ষণ এবং সুরক্ষার কাজে যুক্ত একাধিক বিভাগে কর্মীর প্রবল সঙ্কট রয়েছে। ফলে, কোনও কাজই সময়ে সম্পূর্ণ করা যাচ্ছে না। এছাড়া করমন্ডল দুর্ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কে থাকেন রেলের রক্ষণাবেক্ষণ এবং ট্র্যাফিক বিভাগের কর্মীরাও। দুর্ঘটনার সামান্য আশঙ্কা দেখা গেলেও ট্রেন থামিয়ে দেন এরপর সময় নিয়ে কাজ শেষ করে তারপর পরিষেবা চালু করছেন।

এ বিষয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা আদিত্যকুমার চৌধুরী বলেন, রেলের সব জায়গায় রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। যার কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকছে কিংবা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। রক্ষণাবেক্ষণের এই পর্ব কেটে গেলে আশা করছি, দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

প্রসঙ্গত, ওড়িশায় যে রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেটি বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা। এতে প্রায় ৩০০ জনের মতো প্রাণ হারিয়েছেন। 

এমজে