তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠক করবেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। আগামী সপ্তাহে তিনি তুরস্ক সফরে যাবেন এবং সেখানেই এই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

অন্যদিকে নেতানিয়াহুর আগেই ওই একই সপ্তাহে তুরস্কে যাওয়ার কথা রয়েছে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসেরও। বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে শুক্রবার (২১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনার জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আগামী ২৮ জুলাই তুরস্ক সফর করবেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উভয় নেতার কার্যালয় এই তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে নেতানিয়াহুর সফরের কয়েকদিন আগেই তুরস্ক সফরে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর সফরের কয়েকদিন আগেই অর্থাৎ ২৫ জুলাই তুরস্কে আসছেন ফিলিস্তিনি এই নেতা।

এক বিবৃতিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্সি বলেছে, ‘প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান একই সপ্তাহে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে তুরস্কে স্বাগত জানাবেন।’

এতে আরও বলা হয়েছে, সফরের সময় নেতারা ‘তুরস্ক-ফিলিস্তিন সম্পর্ক ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সর্বশেষ অগ্রগতি, সেইসাথে অন্যান্য প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।’

নেতানিয়াহুর কার্যালয়ও আসন্ন এই তুরস্ক সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আর এর মাধ্যমে ২০০৮ সালে এহুদ ওলমার্টের পর প্রথম কোনো ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশটিতে সফর করবেন নেতানিয়াহু।

এএফপি বলছে, তুরস্কের এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন দখলকৃত পশ্চিম তীরে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সহিংসতার পটভূমিতে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়েছে।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর হামলা ও এর জেরে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল। সেসময় ইসরায়েলি পুলিশ পবিত্র এই স্থানের ভেতরে ফিলিস্তিনিদের সাথে লড়াইয়ে নিযুক্ত হয়েছিল।

এই ঘটনায় ইসরায়েল ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করেছে বলে সেসময় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।

এএফপি বলছে, কয়েক বছরের উত্তেজনার পর গত এক বছরে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। এসময় ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগসহ বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ ইসরায়েলি কর্মকর্তা তুরস্ক সফর করেছেন।

এর আগে ২০১০ সালে ইসরায়েলি বাহিনী তুর্কি জাহাজ মাভি মারমারার ওপর মারাত্মক আক্রমণ চালালে উভয় দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। মূলত ওই জাহাজটি ইসরায়েলি অবরোধের অধীনে থাকা ফিলিস্তিনি গাজা উপত্যকায় সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করছিল।

এছাড়া ২০১৮ সালের মে মাসে গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় প্রায় ৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পর তুরস্ক তেল আবিব থেকে তার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে এবং আঙ্কারায় নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে।

অবশ্য সেই ঘটনায় জেরুজালেমে নিযুক্ত তুর্কি কনসাল জেনারেলকে পাল্টা বরখাস্ত করে ইসরায়েল।

টিএম