মিয়ানমারের কারাবন্দি গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে এবার দাফতরিক গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগে মামলা করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দেশটির প্রচলিত আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে সু চির।

দেশটির ক্ষমতাচ্যুত ও কারাবন্দি প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকেও মামলার আসামির তালিকায় রাখা হয়েছে। তাদের আইনজীবী মিন মিন সোয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।

সু চির অপর আইনজীবী খিন মাউং জাও টেলিফোনে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানান, সপ্তাহখানেক আগে দেশটির প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের আদালতে দাফতরিক গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগ এনে মামলার আবেদন জানিয়েছিলেন বর্তমান সামরিক সরকারের এক কর্মকর্তা। মামলার এক নাম্বার আসামি হিসেবে সু চির নাম আবেদনে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।

এ ছাড়া আসামির তালিকায় থাকা অন্যান্যরা হলেন মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ট, সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) মন্ত্রিসভার তিন সদস্য ও তার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক সিন টার্নেল।

বৃহস্পতিবার সেই আবেদন আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মিন মিন সোয়ে অবশ্য বলেছেন, সু চি ও তার বিশ্বস্ত সহযোগীদের দীর্ঘদিনের জন্য কারাগারে রাখার অভিপ্রায় থেকেই এই সাজানো মামলা দায়ের করেছে জান্তা।

গত ১ ফেব্রুয়ারি অভুত্থানের মাধ্যম ক্ষমতা দখলের পর আটক করা হয় এনএলডি নেত্রী অং সান সু চি, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ এনএলডির বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় তিন হাজার কর্মী-সদস্য-সমর্থককে। দেশটির পার্লামেন্ট ও মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্যও রয়েছেন গ্রেফতারের তালিকায়।

অভ্যুত্থানের পরপরই নেইপিদোতে সু চির বাসভবনে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছিল। সেসময় তার বাসভবন থেকে কয়েকটি ওয়াকি-টকি উদ্ধার করা হয়। জান্তা প্রতিনিধিদের ভাষ্য, মিয়ানমারের আমদানি-রফতানি আইনের লঙ্ঘন করে ওয়াকিটকি আমদানি এবং অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করা হয়েছে।

পরে তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ও অবৈধ স্বর্ণ রাখার অভিযোগও আনা হয়। কাছাকাছি সময়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করে দেশটির পুলিশ। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুরও করেন। মিয়ানমারের সাবেক এই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

অবৈধ ওয়াকি টকি রাখার অভিযোগে গত ফেব্রুয়ারিতেই সু চির বিরুদ্ধে মামলা করেছিল জান্তা। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল। ভিডিও কলের মাধ্যমে সু চিকে শুনানিতে অংশ গ্রহণের অনুমতি দিয়েছিল সামরিক সরকার।

তবে নতুন এই মামলা সম্পর্কে জানতে চেয়ে সামরিক সরকারের একাধিক মুখপাত্রের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেছে রয়টার্স; তাদের কেউই ফোন ধরেননি।

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ