ইরানে নারীদের হিজার পরা নিশ্চিত করতে আরও কঠোর আইন পর্যালোচনা করে পরীক্ষামূলক বাস্তবায়ন নিয়ে একটি বিলে সমর্থন দিয়েছেন দেশটির বেশিরভাগ সংসদ সদস্য। 

সম্প্রতি পার্লামেন্টের একটি উন্মুক্ত অধিবেশনে হিজাব ও সতীত্ব বিলে ১৭৫ জন এমপি সমর্থন দিয়েছেন। এছাড়া ৪৯ জন এর বিপক্ষে ভোট দেন।

এতে স্পষ্টত—দেশটিতে নারীদের হিজাব পরা নিশ্চিতে আইন আরও কঠোর হচ্ছে। একই সঙ্গে যারা হিজাব পরেন না, এ বিল তাদের জন্য নতুন শাস্তির বিধান নিয়ে আসছে। খবর-বিবিসি
 
এদিকে ইরানের সংসদ এখন বিলটি তিন থেকে পাঁচ বছরের বিচার অনুমোদন করতে পারবে। তবে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী আইন সংস্থা কাউন্সিল অব গার্ডিয়ানসকে প্রথমে এটি অনুমোদন করতে হবে। কিন্তু সংবিধানের ৮৫  ধারার প্রয়োগ করে সংসদ সদস্যরা আইনটি পরিবর্তন করতে পারবেন। পরে এটি একটি স্থায়ী আইনে পরিণত হবে। 

সংসদ সদস্য মোহাম্মদ রশিদি বিবিসিকে বলেন, ‘কতদিনের জন্য এটি পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন করা উচিৎ তা এমপিদের ভোটে নির্ধারণ হবে।’

তবে আরেক এমপি গোলামরেজা নুরি-কেজেলজেহ সতর্ক করে দিয়ে বিবিসিকে বলেন, ‘এই পদক্ষেপটি বিপদ ডেকে আনতে পারে। বিশেষ করে যেহেতু বিলের বড় অংশই হিজাব আইন লঙ্ঘবের অপরাধে শাস্তির বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’

এর আগে ২০২২ সালে হিজাব নীতি ভেঙে ইরানে পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাসা আমিনি। পরে পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যু হলে ইরানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। টানা কয়েক মাস ধরে চলে বিক্ষোভ। এরপর বিশ্বজুড়ে কঠোর সমালোচনার মুখে কিছুটা নমনীয় হলেও গত কয়েক মাস ধরে এ বিষয়ে কঠোর হয় দেশটির প্রশাসন। তবে ইরানের রাজনীতিবিদদের মধ্যে এ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই কঠোর আইনের পথে হাটছে দেশটি।

সম্প্রতি ৭০ ধারার খসড়া আইনে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব রাখা হয় বলে খবর প্রকাশ করে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন, যার মধ্যে রয়েছে যারা হিজাব পরতে অস্বীকৃতি জানাবেন তাদের আরও বেশি সময়ের জেল দেওয়া হবে। যেসব তারকা ও ব্যবসায়ী এই আইন ভঙ্গ করবেন তাদের আরও কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। এছাড়া খসড়া আইনে প্রস্তাব করা হয়েছে, যারা আইন ভঙ্গ করবে— আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স ব্যবহার করে তাদের শনাক্ত করা হবে এবং শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

ইরানে বর্তমানে যে হিজাব আইন আছে, সেটি যদি কেউ ভঙ্গ করেন তাহলে তার ১০ দিন থেকে ২ মাস পর্যন্ত জেল হতে পারে অথবা ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ ইরানি রিয়াল জরিমানা হতে পারে। যা বর্তমানে ১ দশমিক ১৮ থেকে  ১১ দশমিক  ৮২ মার্কিন ডলারের সমান।

নতুন খসড়া আইনে এই শাস্তি অনেক বেশি কঠিন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কেউ হিজাব পরিধান বিধান লঙ্ঘন করলে ৫ থেকে ১০ বছরের জেল সঙ্গে ৩৬ কোটি ইরানি রিয়াল জরিমানা হতে পারে। যা ৮ হাজার ডলারেও বেশি।

এমএসএ