সম্মুখসারির করোনাযোদ্ধা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আলাদা করে কোভিড টিকা নেওয়ার আর কোনো সুযোগ থাকছে না ভারতে। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ নির্দেশনা দিয়ে জানিয়েছে এই দুই পর্যায়ভুক্ত মানুষকে ইতোমধ্যে দীর্ঘদিন অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। করোনার টিকা নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় তারা পেয়েছেন।

গত ১৬ জানুয়ারি করোনার টিকা দেওয়া শুরু করা ভারত আরও বেশি মানুষকে টিকা দিতে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সিদ্ধান্ত কার্যকর করার পর কেবল ৪৫ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদেরই টিকা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এর ফলে দ্রুতগতিতে দেশের অধিকাংশ মানুষের কাছে করোনার টিকা পৌঁছানো যাবে।

করোনায় শীর্ষ বিপর্যস্ত দেশটিতে ফের ভাইরাসটির প্রকোপ চলছে এখন। এমতাবস্থায় সরকার জানিয়েছে, প্রথম সারির করোনাযোদ্ধা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে এমন অনেকেই ছিলেন যারা টিকা পাওয়ার যোগ্য নন। তা সত্ত্বেও নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। টিকাও নিয়েছেন। এভাবে আসলে সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করা হচ্ছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ বলেন, ‘সরকারের কো-উইন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নাম নিবন্ধন করে এখন থেকে ৪৫ কিংবা তার চেয়ে বেশি বয়সীরা মহামারি করোনাভাইরাসের টিকা নিতে পারবেন।’

যেসব স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রথম সারির করোনা যোদ্ধারা ইতোমধ্যে টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন, যত দ্রুত সম্ভব তাদের টিকাদানের প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

গত ১৬ জানুয়ারি ভারতে যখন করোনার টিকা দেওয়া শুরু হয়েছিল, তখন অনেক স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রথম সারির করোনাযোদ্ধাই টিকা নিতে চাইছিলেন না। যদিও প্রশাসন বারবার তাদের টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল।

প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব। যেখানে বলা হয়েছে, ‘টিকাদান নিয়ে শুরু থেকেই কেন্দ্রের সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বৈঠক হয়েছে। কিন্তু প্রথম ডোজ নেওয়ার সময়সীমা নিয়ে গোলমাল নজরে এসেছে। বারবার পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে শেষ তারিখ।’

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘এমনকি ষাটোর্ধ্বদের টিকাদান প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরেও স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা নেওয়ার পালা শেষ হয়নি। বিভিন্ন কোভিড টিকাদান কেন্দ্র থেকে খবর পাওয়া গেছে যে, করোনা যোদ্ধা ও স্বাস্থ্যকর্মী না হয়েও নাম নথিভুক্ত করে অনেকে করোনা টিকা নিচ্ছেন। যা কেন্দ্রের ঘোষিত নিয়ম-বিরুদ্ধ।’

এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে মন্ত্রণালয় নতুন নির্দেশনা জারি করল। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা ও স্বাস্থ্যকর্মী— এই দুই গোষ্ঠীভুক্ত মানুষেরা উল্লিখিত পেশার পরিচয়ে টিকা নেওয়ার জন্য আর নতুন করে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন না।

এএস