ইস্টারের ডিমে বিক্ষোভের বার্তা লিখে রোববার অভিনব এক প্রতিবাদ শুরু করেছে মিয়ানমারের স্বৈরশাসনবিরোধী মানুষজন। অনেকে আবার বিক্ষোভ দেখাতে রাস্তায় নেমে নিরাপত্তা বাহিনীর বাঁধার মুখেও পড়েছেন। মোমবাতি জ্বালিয়ে রাতভর ফেব্রুয়ারির এক তারিখে অভ্যুত্থানের পর নিহতদের স্মরণের পরদিন মিয়ানমারের চিত্র এমনই।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী সামরিক শাসনকে অবজ্ঞা করে তাৎক্ষণিক এরকম বেশ কিছু প্রতিবাদের ধরন দেখা যাচ্ছে মিয়ানমারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ডিমের গায়ে ‘আমরা অবশ্যই জয়ী হবো’ এবং সেনাপ্রধান মিন অন হ্লেইংকে লক্ষ্য করে ‘দূর হয়ে যা এমএএইচ’ নামের বার্তা লেখা হয়েছে।   

ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর হাতে ক্ষমতাচ্যুত সু চির নির্বাচিত সরকারের আন্তর্জাতিক দূত ডা. সাসা এক বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘ইস্টার হলো সবটাই ভবিষ্যত বিষয় এবং মিয়ানমারের জনগণের জন্য ফেডারেল গণতন্ত্রে দুর্দান্ত ভবিষ্যত রয়েছে।’ ডা. সাসা বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের একজন প্রতিনিধি। 

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটিতে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়েছে। জান্তাবিরোধী এই বিক্ষোভে দেশটির মানুষ নানান সৃষ্টিশীল উপায়ে স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। ডিমে স্লোগান লিখে এই প্রতিবাদ তাতে নতুন মাত্রা যোগ করলো।

জান্তা সরকার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে উঠেছে এসব প্রতিবাদ প্রদর্শনের মূল জায়গা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট হওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রোববার মিয়ানমারের প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনে মানুষজনকে ডিম হস্তান্তর করছেন। যেসব ডিমে লেখা আছে জান্তাবিরোধী নানান স্লোগান। 

অধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) তথ্য অনুযায়ী মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর চলমান বিক্ষোভে শনিবার পর্যন্ত দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৫৫৭ জন বিক্ষোভকারী প্রাণ হারিয়েছেন। তবে এরপরও থেমে নেই সেনা অভিযান। প্রতিদিনই বিক্ষোভরত মানুষের মৃত্যুর খবর আসছে।

এএস