ভারতের শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির পরিবার দেশটির পুঁজিবাজারে কয়েক শ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। এর মাধ্যমে গোপনে নিজেদের শেয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে কিনে নিয়ে স্টক ‘ম্যানিপুলেশন’ করছে। সম্প্রতি অলাভজনক মিডিয়া সংস্থা—অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্টের (ওসিসিআরপি) ফাঁস হওয়া নথির বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে।

এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে নিউইয়র্কভিত্তিক আর্থিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ আদানি গ্রুপকে ‘করপোরেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জালিয়াতির’ অভিযোগে অভিযুক্ত করে একই তথ্য দিয়েছিল। এছাড়া—নিজেদের শেয়ার ভিন্ন পথে কিনে দাম নির্ধারণ করে আদানিরা। তখন সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন গৌতম আদানি। সেই অভিযোগ নিয়ে চলমান তদন্তের মধ্যেই এবার সামনে এসেছে ওসিসিআরপির চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন। 

ওসিসিআরপির প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে কয়েক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছিল মরিশাসের অস্বচ্ছ একটি ফান্ড থেকে। সেই ফান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল আদানি পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ব্যবসায়ী অংশীদাররাই। আদানি পরিবারের সহযোগীরা গত কয়েক বছর ধরেই বিচক্ষণতার সঙ্গে নিজদের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনে নেওয়ার কাজটি করে যাচ্ছেন। 

আদানি পরিবারের এমন কর্মকাণ্ডের ফলে আদানি গ্রুপের শেয়ারের মূল্য আকাশচুম্বী হয়ে যায়। ২০২২ সালে একপর্যায়ে আদানি গ্রুপের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। পরবর্তীতে হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদন প্রকাশের পর আদানি গ্রুপ ১০ হাজার কোটি ডলার সম্পদ হারায়।

এদিকে একাধির কর সংক্রান্ত নথি ও আদানি গোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ ইমেল সামনে এনে অস্বচ্ছ লেনদেন নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে অর্গানাইজন ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রোজেক্ট। প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তত দুটি ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে অস্বচ্ছভাবে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার কেনাবেচা করা হয়েছে। সেখানে আদানির বড় ভাই বিনোদের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে।

অপরদিকে ওসিসিআরপির প্রতিবেদনে উল্লেখিত অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলেছে আদানি গোষ্ঠী। তাদের দাবি, ওসিসিআরপি-র প্রতিবেদনে মরিশাসের যে ফান্ডের কথা বলা হচ্ছে, সেটা হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টেও ছিল। পুরো অভিযোগই ভিত্তিহীন। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট থেকেই তুলে এনে তা প্রকাশ করেছে ওসিসিআরপি।

আরও পড়ুন: সপ্তাহে ৩০০০ কোটি টাকা হারিয়েছেন আদানি

আদানি গোষ্ঠী বলেছে, শর্ট-সেলারের স্টক ম্যানিপুলেশনের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। এটি ভারতের ওপর পরিকল্পিত আক্রমণ। ভারতের প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা সততা ও মানের ওপর হামলা।

এমএসএ