করোনা মহামারির সময় মাস্ক ও পিপিই পরে থাকতে দেখা গেছে বিশ্বের সব দেশের মানুষকে, সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরতে উদ্বুদ্ধ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউসি (ইনসেটে)।

চীন থেকে উদ্ভব হওয়া প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার পর সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়। ওই সময় বলা হয় মাস্ক ব্যবহার করলে একজনের থেকে আরেকজনের দেহে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের মহামারি ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউসি এ ব্যাপারে সবচেয়ে সরব ছিলেন। তার পরামর্শে যুক্তরাষ্ট্রে একটা সময় মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। স্কুল-কলেজ, হাট-বাজার, অফিস-আদালত এমন কোথাও নেই যে মাস্ক পরার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। আর মার্কিন এ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে বিশ্বের প্রায় সব দেশে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছিল।

তবে সেই ফাউসি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সঙ্গে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মাস্কে করোনার সংক্রমণ ঠেকানো গেছে এমন কোনো শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে তিনি তাও বলেছেন, বিশ্বজুড়ে যেহেতু আবারও করোনার ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে, ফলে মাস্ক পরার নির্দেশনা মেনে চলা উচিত।

এ ব্যাপারে ফাউসি বলেছেন, ‘আপনি যদি পুরো মহামারির ওপর (মাস্কের) প্রভাবের কথা বলেন, তাহলে এর পক্ষে তথ্য (প্রমাণ) কম।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘তবে আরও অন্যান্য গবেষণাও রয়েছে, যেটি দেখিয়েছে, ব্যক্তি ক্ষেত্রে, ব্যক্তিগতভাবে, মাস্ক সুরক্ষা দেয়।’

যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রফেসর করোনার সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষেত্রে মাস্কের ভূমিকা নিয়ে একটি গবেষণা করেছেন। এ গবেষণা শেষে তিনি বলেছেন, ‘কোনো প্রমাণ নেই— মাস্ক কোনো পার্থক্য তৈরি করেছিল।’

করোনা প্রতিরোধে মাস্ক খুব বড় ভূমিকা রাখেনি এমন দাবি করেছেন আরও বেশ কয়েকজন গবেষক। ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্কের কার্যকারিতা না থাকার বিষয়টি সামনে আসার পর কাঁঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় ফাউসিকে।

তবে গত গ্রীষ্মে সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফাউসি বলেছিলেন, সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরার যে পরামর্শ তিনি দিয়েছিলেন, এ নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই।

এর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ফাউসি স্বীকার করেছিলেন, বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা নিয়ে মানুষের মধ্যে বিরক্তভাব চলে এসেছে।

সূত্র: সিএনএন, ডেইলি মেইল

এমটিআই