মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি ভয়ানক দাঁতের ব্যাথায় ভোগার কারণে খাওয়া দাওয়া করতে পারছেন না, ভুগছেন নিম্ন রক্তচাপেও; কিন্তু ক্ষমতাসীন জান্তা তাকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে চরম উদাসীনতা প্রদর্শন করছে বলে অভিযোগ করেছেন তার ছেলে কিম অ্যারিস।

বিবিসি বার্মিজকে এক খুদে বার্তায় কিম অভিযোগ করেন, বর্তমানে গৃহবন্দি অবস্থায় থাকা সু চির শারীরিক অবস্থার বিবরণ জানিয়ে জরুরিভিত্তিতে চিকিৎসার জন্য জান্তার কাছে আবেদন করেছিল কারা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু জান্তা সেই আবেদনের কোনো জবাব দেয়নি।

কারাগারের একাধিক সূত্র বিবিসিকে সু চির এই শারীরিক অসুস্থতার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সু চি গুরুতর দাঁতের ব্যথায় ভুগছেন এবং এই ব্যাথার কারণে খাবার খেতে পারছেন না। এ কারণে গত দু-তিন দিন ধরে তাকে নরম খাবার ও স্বাস্থ্যসম্মত দেওয়া হচ্ছে।

ঠিকমতো খাওয়া দাওয়ান না করার কারণে ইতোমধ্যে তার নিম্ন রক্তচাপ শুরু হয়েছে বলেও জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, ৭৮ বছর বয়সী অং সান সু চি দীর্ঘস্থায়ী গাম ডিজিজে আক্রান্ত। দাঁতের এই রোগটি মূলত মাড়ির রোগ। দাঁতের গোড়ায় জমা প্লাগ এ রোগের উৎস। গাম ডিজিজে আক্রান্ত রোগীদের প্রায় সময়েই মাড়ির অংশবিশেষ ফুলে যায় এবং তীব্র ব্যাথা অনুভূত হয়।

জান্তার এক মুখপাত্র অবশ্য জানিয়েছেন যে সু চির শারীরিক অবস্থা ভালো এবং তাকে নিয়মিত সামরিক ও বেসামরিক চিকিৎসকদের একটি দল চেক আপ করছেন। তবে তাদের এই বক্তব্য বিশ্বাস করেননি কিম।

যুক্তরাজ্যনিবাসী ৪৬ বছর বয়সী কিম অ্যারিস খুদে বার্তায় বলেন, ‘গাম ডিজিজের সংক্রমণ শুরু হলে কোনো রোগী ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করতে পারেন না। ফলে দ্রুত চিকিৎসা না করলে রোগীর পুরো স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে।’

‘একজন অসুস্থ বন্দির চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে উদাসীনতা বিশ্বের বড় ধরনের নিষ্ঠুরতাগুলোর মধ্যে একটি।’

উল্লেখ্য, নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। ওই রাতেই বন্দি করা হয় অং সান সু চিকে।

বন্দির পর দীর্ঘ আড়াই বছর অজ্ঞাত এক কারাগারে বন্দি ছিলেন মিয়ানমারের এই গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী। গত জুন মাসে তাকে কারাগার থেকে সরিয়ে রাজধানী নেইপিদোর একটি বাড়িতে গৃহবন্দী অবস্থায় রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র : বিবিসি

এসএমডব্লিউ