আফ্রিকার দুই প্রতিবেশী দেশ ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় ৪ দিনের সংঘাতে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত চারদিনের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ১০০ ইথিওপীয় ও ২৫ সোমালি নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন দু’দেশের সরকারি কর্মকর্তারা।

ইথিওপিয়ার আফার প্রদেশের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে সোমালিয়ার। সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি এলাকা নিয়ে দু’দেশের বিরোধও রয়েছে।

২০১৪ সালে ইথিওপিয়া সরকার আফার প্রদেশের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করলে সেই বিরোধ চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। সোমালি সরকার অভিযোগ করে, সীমান্তবর্তী সোমালিয়ার অন্তত তিনটি শহর অন্যায়ভাবে দখল করেছে ইথিওপিয়া। সেই থেকেই দু’দেশের সংঘাত শুরু।

আফার প্রদেশের উপ-পুলিশ কমিশনার আহমেদ হুমেদ টেলিফোনে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সোমালিয়ার মিলিশিয়া বাহিনীর হামলায় আফারের সীমান্ত এলাকায় প্রায় ১০০ সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন। তারা অধিকাংশই পেশায় পশুপালক ও আর্থিকভাবে দরিদ্র।

আফার প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র আহমেদ কালোয়েত ফ্রান্সের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, গত শুক্রবার প্রদেশের হারুকা শহরে সোমালিয়ার বিশেষ পুলিশ ও মিলিশিয়াদের একটি দল হামলা চালায়। তাদের নির্বিাচার গুলিতে নারী ও শিশুসহ অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরো ৫০ জন।

তিনি বলেন, ‘সোমালি বাহিনী হামলার চালানোর পর স্থানীয় জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। হামলাকারী কয়েকজনকে তারা আটক করেছে এবং আটক সোমালিরা বর্তমানে ইথিওপিয়া সরকারের হেফাজতে রয়েছে।’

সোমালিয়া সরকার অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দেশটির সরকারের মুখপাত্র আলি বেদেল বলেন, সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের প্রতিবাদ করায় সোমালি সীমান্তরক্ষীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল ইথিওপিয়ার ‘সন্ত্রাসীরা’। তাদের হামলায় ২৫ জন মারা গেছেন।

তিনি বলেন, অপরাধীদের ধরতেই হারুকা শহরে অভিযান চালিয়েছিল বিশেষ পুলিশ ও মিলিশিয়া বাহিনী এবং তাদের অভিযানে কোনো সাধারণ মানুষ মারা যায়নি।

দীর্ঘ কয়েক দশকজুড়ে জাতিগত সংঘাত চলছে ইথিওপিয়ায়। ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে প্রধান দুটি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী ওরোমো এবং আমহারা। সম্প্রতি ইথিওপিয়ার তাইগ্রে প্রদেশে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদপন্থি সরকারের সঙ্গে ব্যাপক রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে প্রদেশের বিদ্রোহী রাজনৈতিক দল ইথিওপিয়ন পিপলস রেভোল্যুশনারী ফ্রন্টের। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে, দেশের আঞ্চলিক সমন্বয়কে রক্ষা করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে ইথিওপিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের।

দেশের এই রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ সোমালিয়া নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ইথিওপিয়ার সরকারি কর্মকর্তারা।

সূত্র: আলজাজিরা

এসএমডব্লিউ