নিজেদের প্ল্যাটফর্ম থেকে মুসলিমবিদ্বেষী কন্টেন্ট মুছতে ‘ব্যর্থ’ হওয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল মুসলিম আইনজীবী। বৃহস্পতিবার রাজধানী ওয়াশিংটনের উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করেন তারা।

আইনজীবীদের অভিযোগ, ঘৃণামূলক বক্তব্য বা কন্টেন্টের (হেইট স্পিচ/কন্টেন্ট) ফেসবুক কোম্পানি থেকে এর আগে বলা হয়েছিল, তাদের প্ল্যাটফর্মে কোনো ব্যবহারকারী ঘৃণামূলক কোনো বক্তব্য বা কন্টেন্ট পোস্ট করলে কোম্পানি নিজ উদ্যোগে তা মুছে দেবে; কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, ফেসবুকে নিয়মিত মুসলিমবিদ্বেষী বিভিন্ন কন্টেন্ট বা বক্তব্য পোস্ট করা হচ্ছে, কিন্তু সেগুলো সরানোর ক্ষেত্রে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের গাফিলতি দেখা যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইনের আওতায় কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্লাটফর্মে ঘৃণামূলক বক্তব্য বা কন্টেন্ট পোস্ট করা হলে তার দায় বর্তায় পোস্টদাতার ওপর, সেই প্ল্যাটফরমকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় না।

তবে সম্প্রতি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে, তারা নিজেদের প্ল্যাটফর্মে ঘৃণাপূর্ণ কোনো বক্তব্য/ কন্টেন্ট উৎসাহিত করবে না। কোনো ব্যবহারকারী যদি ঘৃণাপূর্ণ বক্তব্য/কন্টেন্ট ফেসবুকে শেয়ার বা পোস্ট করেন, তা মুছে দেওয়া হবে।

আইনজীবীরা মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, মুসলিমবিদ্বেষী বক্তব্য/ কন্টেন্ট মুছতে গাফিলতি করেছে ফেসবুক। এর মাধ্যমে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি তার নিজের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছে বলেও মনে করছেন তারা।

মামলার অভিযোগে আইনজীবীরা বলেন, ‘২০১৭ সালে ফেসবুকে ২৬টি গ্রুপ চিহ্নিত করা হয়েছিল, যারা তাদের পেজে নিয়মিত মুসলিমবিদ্বেষী বক্তব্য এবং কন্টেন্ট প্রচার করে। ফেসবুক যদিও বলেছে, তারা কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি ঘৃণামূলক বক্তব্যকে স্থান দেয় না, কিন্তু আমাদের পর্যবেক্ষণ বলছে এখন পর্যন্ত ওই ২৬টি গ্রুপের ১৮টিই সক্রিয় আছে ফেসবুকে।’

ফেসবুক কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মামলা দায়েরের পরই বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ফেসুবকের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা সবসময় ফেসবুকে ঘৃণামূলক বক্তব্যকে স্থান দেওয়া থেকে বিরত থাকি। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ফেসবুক যেন সবার কাছে একটি নিরাপদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে পরিচিতি ও স্বীকৃতি পায় সেজন্য কোম্পানি এ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ফেসবুক ইতোমধ্যে বিপুল পরিমাণ মুসলিমবিদ্বেষী বক্তব্য ও কন্টেন্ট মুছে দিয়েছে এবং দিচ্ছে। যেগুলো বাকি রয়েছে, সেগুলোও অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়া হবে।’

সূত্র: আলজাজিরা

এসএমডব্লিউ