ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা সকল নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে চীন। শুক্রবার (৯ এপ্রিল) অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ইরানের পরমাণু সমঝোতাবিষয়ক যৌথ কমিশনের বৈঠক শেষে একথা বলেন জাতিসংঘের ইউরোপীয় দফতরে নিযুক্ত চীনের স্থায়ী প্রতিনিধি ওয়াং কিউন।

চীনা বার্তাসংস্থা সিনহুয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওয়াং কিউন বলেন, ইরানের ওপর একতরফাভাবে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে চীনসহ বৈঠকে উপস্থিত দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কাজেই অবিলম্বে আমেরিকাকে এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।

এর আগে গত মঙ্গলবার ভিয়েনায় পরমাণু সমঝোতার যৌথ কমিশনের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার এ সংক্রান্ত দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে ইরানের সঙ্গে পরাশক্তি দেশগুলোর পরমাণু সমঝোতায় যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দেওয়া হয়। আহ্বান জানানো হয় মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেরও।

বৈঠকে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন, রাশিয়া, ইরান ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি ভিয়েনায় উপস্থিত থাকলেও এ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেনি।

তেহরানের দাবি, আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে গিয়ে এই সমঝোতা সংক্রান্ত বৈঠকে বসার যোগ্যতা হারিয়েছে এবং দেশটিকে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে এই সমঝোতায় ফিরে আসতে হবে। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্ব পরাশক্তির মধ্যে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু ২০১৮ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ত্রুটিপূর্ণ’, ‘একপেশে’, ‘এর কোনো ভবিষ্যৎ নেই’ অভিযোগ তুলে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পর চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলার ব্যাপারে ইরানও উদাসীন হয়ে পড়ে।

এরপর তেহরানের ওপর আবারও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে চীন, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি সমঝোতায় টিকে থাকলেও চুক্তি মেনে চলার ক্ষেত্রে এসব দেশের ঢিলেঢালা মনোভাব  ছিল লক্ষ্য করার মতো। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রকে আবারও ফিরিয়ে এনে পরমাণু সমঝোতা কার্যকর করতে তৎপর দেশগুলো।

সূত্র: সিনহুয়া

টিএম