ফ্রান্সে একটি মসজিদের দেয়ালে ইসলামবিদ্বেষী দেয়ালচিত্র (গ্রাফিতি) অঙ্কনের অভিযোগ উঠেছে। রোববার দেশটির রেনে শহরের ইসলামিক কালচারাল সেন্টার এবং এর সংলগ্ন মসজিদের দেয়ালে এই গ্রাফিতি দেখা গেছে। তবে কারা এজন্য দায়ী, তা এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

রোববার ভোরে মসজিদটির তত্ত্বাবধায়ক প্রথম এই ব্যাপারটি লক্ষ্য করেন। ফ্রান্সের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা এএফপিকে তিনি জানিয়েছেন, দেয়ালচিত্রে ইসলাম এবং এই ধর্মের প্রবর্তক নবী মুহম্মদ (স) এর উদ্দেশে বিষোদ্গার করার পাশাপাশি বলা হয়েছে, ফ্রান্সে ক্রুসেড বা ধর্মযুদ্ধ শুরু হয়েছে। ক্যাথলিক খ্রিস্টান মতবাদকে রাষ্ট্রধর্ম করার দাবিও জানানো হয়েছে সেখানে।

রেনের স্থানীয় মুসলিম কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ জাইদৌনি এ ঘটনাকে ‘অশ্লীল আক্রমণ’ হিসেবে উল্লেখ করে এএফপিকে বলেন, ‘এই প্রজাতান্ত্রিক দেশের সন্তান হওয়ার পরও সম্প্রতি আমরা ঘৃণা, সহিংসতা ও বর্বরতার শিকার হচ্ছি।’

দেয়ালচিত্র ঘটনার নিন্দা এবং ফ্রান্সে বসবাসকারী মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি সংহতি জানিয়ে টুইট করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেরাল্ড ডারমানিন। রেনের মেয়র নাথালি অ্যাপেরে এবং শহরটির সিনেটর ভ্যালেরি বয়েরও পৃথক বার্তায় নিন্দা জানিয়েছেন এই ঘটনার।

গতবছর চরমপন্থি মুসলিমগোষ্ঠীর হাতে কয়েকজন নাগরিক নিহতের পর থেকে ফ্রান্সে বেড়ে চলেছে ইসলামের বিরুদ্ধে ভীতি ও বিদ্বেষ। এবার এই বিদ্বেষের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে দেশটির মসজিদগুলো।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে নান্তেস শহরে একটি মসজিদের প্রবেশ দরজা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তার পরেরদিন শুক্রবার পশ্চিম ফ্রান্সের মসজিদগুলো ধ্বংসের হুমকি দেওয়ায় ২৪ বছর বয়সী এক নাৎসি মতবাদ সমর্থনকারীকে গ্রেফতার করে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। 

ফ্রান্সের ইসলামবিদ্বেষবিরোধী জাতীয় পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ জেকরি ক্রমবর্ধমান এই ইসলামবিদ্বেষের জন্য দেশটির রাজনীতিকদের দায়ী করেছেন।

এএফপিকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনায় ফ্রান্সে ইসলামের বিরুদ্ধে এক প্রকার ভীতি সৃষ্টি হয়েছে, এটি সত্য। তবে দেশের রাজনীতিবিদদের কর্মকাণ্ড এই ভীতিকে কমানোর পরিবর্তে বরং বাড়িয়ে তুলছে।’

সূত্র: এএফপি

এসএমডব্লিউ