আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রথম কাঠের তৈরি স্যাটেলাইট (উপগ্রহ) মহাকাশে পাঠাতে যাচ্ছে  যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান। দেশ দুটির মহাকাশ সংস্থা নাসা ও জেএএক্সএ এটির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

লিগনোস্যাট মিশন নামে পরিচিত এই উদ্ভাবনী প্রকল্পটির লক্ষ্য একটি পুনর্নবীকরণযোগ্য এবং বায়োডিগ্রেডেবল (ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কিছু দ্বারা পচনশীল হতে সক্ষম) উপাদান ব্যবহার করে মহাকাশে জায়গা নষ্ট হওয়ার ক্রমবর্ধমান সমস্যার সমাধান করবে।

লিগনোস্যাট স্যাটেলাইট কী?

লিগনোস্যাট উপগ্রহের নামকরণ, কাঠের জন্য ল্যাটিন শব্দের নামানুসারে করা হয়েছে। এটি একটি ছোট, কিউব-আকৃতির কাঠামো হবে যার ব্যাস প্রায় ১০ সেন্টিমিটার এবং ওজন প্রায় ৩৩০ গ্রাম। এটি প্রাথমিকভাবে ট্রিটেড জাপানি ম্যাগনোলিয়া কাঠ থেকে তৈরি করা হবে, এটি একটি হালকা ওজনের এবং টেকসই উপাদান যাকে মহাকাশের চরম পরিস্থিতি সহ্য করার ক্ষমতার জন্য সাবধানে নির্বাচন করা হয়েছে।

স্যাটেলাইটটি মহাকাশে কাঠের কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য ডিজাইন করা বিভিন্ন সেন্সর এবং যন্ত্র বহন করবে এবং ভবিষ্যতের মহাকাশযানে এর সম্ভাব্য অ্যাপ্লিকেশনের জন্য তথ্য সংগ্রহ করবে। এই পরীক্ষাগুলা কাঠের তাপ পরিবাহিতা, কাঠামোগত অখণ্ডতা এবং বিকিরণ এক্সপোজার প্রতিরোধ করার ক্ষমতা মূল্যায়নের ওপর ফোকাস করবে।

কাঠের স্যাটেলাইটের তাৎপর্য

লিগনোস্যাট মিশন মহাকাশ ধ্বংসাবশেষের ক্রমবর্ধমান সমস্যা প্রশমিত করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অপারেশনাল মহাকাশযান এবং ভবিষ্যৎ মহাকাশ অনুসন্ধান প্রচেষ্টা দুইয়ের জন্যই মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরের পর বছর ধরে, হাজার হাজার স্যাটেলাইট, রকেট বডি এবং মানবসৃষ্ট স্পেস জাঙ্কের অন্যান্য টুকরা কক্ষপথে জমা হয়েছে। এগুলো ধ্বংসাবশেষের একটি বিপজ্জনক মেঘ তৈরি করেছে যার সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোর সঙ্গে সংঘর্ষ করতে পারে এবং গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো ব্যাহত করতে পারে।

স্যাটেলাইট নির্মাণে কাঠের ব্যবহার মহাকাশ শিল্পে অনেক ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। মহাকাশের শূন্যতায় কাঠ পুড়ে যায় না বা পচে না। যদিও, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশের পর এটি সূক্ষ্ম ছাই হয়ে যাবে। এটি কাঠকে একটি বায়োডিগ্রেডেবল ‌উপাদান করে তোলে যা পরিবেশের জন্য নিরাপদ। 

বলা হয়েছে, ‘আউটার স্পেসের চরম পরিবেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তাপমাত্রার পরিবর্তন এবং দশ মাস ধরে তীব্র মহাজাগতিক রশ্মি এবং বিপজ্জনক সৌর কণার সংস্পর্শে থাকা সত্ত্বেও, পরীক্ষাগুলোতে কোনো ক্র্যাকিং, ওয়ার্পিং, পিলিং বা পৃষ্ঠের ক্ষতির মতো কোনো পচন বা বিকৃতি পাওয়া যায়নি।’

এমএ