বিরতির প্রথম দিন ৩৯ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল
গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে ৩৯ জন কারাবন্দি ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। এই কারাবন্দিদের সবাই নারী ও শিশু বা অপ্রাপ্তবয়স্ক।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যে ৩৯ জন করাবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে, তাদের সবাইকে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর হাইফার ডেমন এবং মেগিডো থেকে বাছাই করা করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ফিলিস্তিনের কমিশনার অব প্রিজনার্স কাদারা ফারেস কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘প্রথমে জেরুজালেমে এই ৩৯ জনকে আনা হবে এবং সেখানে রেড ক্রস ও রেডক্রিসেন্ট প্রতিনিধিদের কাছে তাদের হস্তান্তর করা হবে। এই বন্দিদের মধ্যে যারা গাজার বাসিন্দা, তারা সেখান থেকে উপত্যকায় রওনা দেবেন।’
‘আর যারা পশ্চিম তীরের বাসিন্দা, তাদেরকে বেইতুনিয়া ক্রসিংয়ে পৌঁছে দেওয়া হবে। সেখান থেকে তারা নিজ নিজ গ্রাম বা শহরে ফিরে যেতে পারবেন। গোটা প্রক্রিয়াটি হবে রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট প্রতিনিধিদের তত্ত্বাবধানে।’
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, শুক্রবার থেকে গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যে চারদিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে, সেই চুক্তিতে ইসরায়েলি জিম্মিদের বিনিময়ে ফিলিস্তিনের কারাবন্দিদের মুক্তির শর্ত রেখেছিল হামাস।
হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যুদ্ধবিরতির চার দিনে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে ৪০ জনকে মুক্তি দেবে হামাস, তার পরিবর্তে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১৫০ জনকে ছেড়ে দিতে হবে।
গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরায়েলে প্রবেশ করে নির্বিচারে সামরিক-বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করে তারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৮ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন।
হামাসের এই হামলার জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। ১৬ অক্টোবর থেকে তাতে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৪ হাজার। আর গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন।
শুরু থেকেই এই যুদ্ধে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করে আসা কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বিকাল ৪টার (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা) দিকে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে ১৩ জনকে মুক্তি দেবে হামাস। এই ১৩ জনের সবাই নারী এবং শিশু।
আশা করা হচ্ছে, কাছাকাছি সময়ে এই কারাবন্দি ফিলিস্তিনিদেরও মুক্ত করা হবে।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি আছেন অন্তত ৭২ হাজার ফিলিস্তিনি পুরুষ, নারী এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী।
সূত্র : সিএনএন, আলজাজিরা
এসএমডব্লিউ