ফিলিপাইনের মিন্দানাও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অনুষ্ঠানে বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামকে স্টেট (আইএস)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে আইএস জানিয়েছে, আইএস মিন্দানাও শাখার সদস্যরাই এই বিস্ফোরণ।

ফিলিপাইনের মুসলিম নাগরিকদের বেশিরভাগই বসবাস করেন দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ মিন্দানাও ও তার আশপাশের দ্বীপগুলোতে। ওই অঞ্চলটি ‘মিন্দানাও রিজিয়ন’ নামে পরিচিত।

রোববার মিন্দানাও রিজিয়নের মারাউই শহরের মিন্দানাও স্টেট ইউনিভার্সিটির ব্যয়ামাগারে রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছিল। সেই সময় বোমা বিস্ফোরিত হয় সেখানে। শক্তিশালী সেই  এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ৪ জন এবং আহত হন আরও ৫০ জন।

বোমা বিস্ফোরণের পর তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্ডিনান্দ মার্কোস জেআর এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘ফিলিপাইনে এর আগে এত কাণ্ডজ্ঞানহীন, ঘৃণ্য হামলার ঘটনা ঘটেনি। বিদেশি সন্ত্রাসীরা এই হামলার জন্য দায়ী।’

তার এই বিবৃতির কিছু সময় পর টেলিগ্রাম পোস্টে আইএসের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আইএস মিন্দানাও শাখার সদস্যরা এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।’

মিন্দানাও অঞ্চলের প্রদেশ লানাও দেল সুরের রাজধানী শহরের নাম মারাউই। এই অঞ্চলটিতে গত প্রায় দুই দশক ধরে তৎপরতা চালাচ্ছে আইএস, আলকায়দাসহ বিভিন্ন বিদেশি ও অভ্যন্তরীণ জঙ্গি গোষ্ঠী। ২০১৭ সালে মারাউই দখল করে নিয়েছিল আইএসের ফিলিপাইন শাখা দাওলাহ ইসলামিয়া মাউতে। দখলের পর গোটা লানাও দেল সুর প্রদেশকে আইএসের ‘উইলায়াত’ বা প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে দাওলাহ ইসলামিয়া মাউতে।

তবে তারপর ফিলিপাইনের সেনা বাহিনীর তীব্র অভিযানে প্রদেশটি ৫ মাসের বেশি দখলে রাখতে পারেনি দাওলাহ। সেই অভিযানে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজারেরও বেশি মানুষ। নিহতদের মধ্যে জঙ্গি, সেনা, বেসামরিক— সব ধরনের মানুষ ছিলেন।

সেনা অভিযানে পিছু হটার পর থেকে মিন্দানাও অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে চোরাগুপ্তা হামলা শুরু করে দাওয়লাহ। রোববারের হামলাটিকেও সেই ধরনের হামলা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন ফিলিপাইনের সেনাপ্রধান জেনারেল রোমিও ব্রাউনার।

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বৈশ্বিক আধ্ম্যাতিক নেতা পোপ ফ্রান্সিস এই বোমা হামলার ঘটনায় হতাহতদের প্রতি গভীর শোক জানিয়েছেন।

রয়টার্স

এসএমডব্লিউ