করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হাঁপানি রোগের ওষুধ বিউডেসোনাইড। তরুণদের পাশাপাশি বয়স্ক করোনা রোগীদের ক্ষেত্রেও সমানভাবে কার্যকর এই ওষুধটি।

শুধু তাই নয়, করোনা হওয়ার পর যারা নিয়মিত বিউডেনোসাইড ব্যবহার করেন, তারা সাধারণ চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের চেয়ে অন্তত তিনদিন আগে সুস্থ হয়ে ওঠেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে এসব তথ্য।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত ১ হাজার ৭০০ রোগীর ওপর একটি পরীক্ষা (হিউম্যান ট্রায়াল) চালিয়েছে। এতে অংশ নেওয়া সবার বয়স ছিল ৫০-৬৫। সেই পরীক্ষায় ৭৫১ জনকে দেওয়া হয়েছিল বিউডেসোনাইড। বাকিদেরকে দেওয়া হয়েছিল করোনার চিকিৎসার প্রচলিত ওষুধ।

এই ৭৫১ রোগীদের দিনে দু’বার বিউডেসোনাইড ব্যবহার করতে বলা হয়েছল। পরীক্ষা শেষে দেখা গেছে, বিউডেসোনাইড ব্যবহারকারী রোগীরা প্রচলিত চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের তুলনায় গড়ে তিনদিন আগেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

করোনায় সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকেন ৫০ বছর বা তারচেয়ে বেশি বয়সী রোগীরা। এই রোগের উপসর্গ দেখা দেওয়ার অল্পদিনের মধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাদের। গবেষকরা জানিয়েছেন, তাদের পরীক্ষায় যারা অংশ নিয়েছেন, তাদের কেউ হাসপাতালে যাননি। বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিয়েছেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ের জেরে হাসপাতালে করোনা রোগীদের শয্যার অভাব হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তাদের হাসপাতালে না ভর্তি করিয়ে বাড়িতে রেখে কী কী উপায়ে সারিয়ে তোলা যেতে পারে, তা খতিয়ে দেখতেই চালানো হয়েছিল এই গবেষণা।

মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে এটি শুরু হয়। গবেষকরা বলছেন, এখন পর্যন্ত যে ফল পাওয়া গেছে, তা প্রাথমিক। এপ্রিলের শেষ নাগাদ এই গবেষণা শেষ করে প্রাপ্ত তথ্য পিআর রিভিউয়ের জন্য মেডিকেল জার্নালে প্রকাশ করা হবে।

গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাইমারি কেয়ার বিভাগের অধ্যাপক ক্রিস বাটলার বলেছেন, ‘যেটি আরও বেশি আশার কথা তা হল—হাঁপানির এই ওষুধটি মানবদেহে কোনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না।’

বাজারে সহজলভ্য অন্যান্য হাঁপানির ওষুধের তুলনায় বিউডেনোসাইডের দাম কম। ব্যবহারকারীরা ইনহেলারের মাধ্যমে এই ওষুধটি নিয়ে থাকেন।

ব্রিটেনের সরকারি চিকিৎসাসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান এনএইচএসের (ন্যাশনাল হেলথকেয়ার সার্ভিস) ইংল্যান্ড শাখার পরিচালক অধ্যাপক স্টিফেন পওইস বিবিসিকে বলেন, ‘এই গবেষণা এবং তার ফলাফল খুবই আশাব্যাঞ্জক। করোনা চিকিৎসায় এই ওষুধটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার হলে বিশ্বজুড়ে হাসপাতলগুলোতে করোনা রোগীর চাপ কমা শুরু করবে।’

সূত্র: বিবিসি

এসএমডব্লিউ