ফ্রান্সের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে সর্বসম্মতিতে একটি বিল পাস হওয়ার পর তা আইনে পরিণত হয়েছে। পাস হওয়া নতুন আইন অনুযায়ী ১৫ বছরের কম বয়সী কারো সঙ্গে যৌন সংসর্গ করলে তা ধর্ষণ হিসেবে অভিহিত হবে। আর আইন ভাঙলে হবে কড়া শাস্তি।

এর আগে ফ্রান্সে ‌‘এজ অব কনসেন্ট’ বা ‘যৌন সংসর্গের ক্ষেত্রে সম্মতির’ ন্যূনতম বয়স ছিল ১৫ বছর। তার নিচে কারো সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়িত থাকার অভিযোগ এলে আইনজীবীদের প্রমাণ করতে হতো যে, সম্মতি ছাড়া সেই সম্পর্ক হয়েছে।

সম্মতি ছাড়া যৌন সংসর্গের বিষয়টি প্রমাণিত হলে তা ধর্ষণ হিসেবে স্বীকৃত হতো। এবার আইন কড়া করা হলো। এখন থেকে ১৫ বছর বয়সীদের নিচে যৌন সম্পর্ক মানেই তা ধর্ষণ বলে চিহ্নিত হবে।

সর্বসম্মতিক্রমে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে পাস হওয়ার আগে দেশটির উচ্চকক্ষ সিনেটেও বিলটি অনুমোদিত হয়েছিল। 

আইনটি পার্লামেন্টের উভয়কক্ষে পাস হওয়ার পর দেশটির বিচার বিষয়ক মন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের বাচ্চাদের জন্য ঐতিহাসিক আইন হলো। কোনো প্রাপ্তকবয়স্ক পুরুষ এখন আর সম্মতির ভিত্তিতেও ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়াতে পারবে না।’

ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির কিছু সদস্য বলেছেন, যদি ১৫ বছরের কম বয়সীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, তা হলে অপ্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে বয়সে কয়েক বছরের বড় কেউ সম্পর্ক স্থাপন করলেই শাস্তি পাবে। সমাজে এর বিরূপ প্রভাবও দেখা দিতে পারে। 

তবে আইনে ‌‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ নামে একটি ধারাও রাখা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, অপ্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে পাঁচ বছর পর্যন্ত বড়রা সম্মতির ভিত্তিতে যৌন সম্পর্ক গড়ে তুললে তাকে ধর্ষণ বলা হবে না। কিন্তু যৌন নিগ্রহ করলে সেক্ষেত্রে শাস্তি পেতে হবে।

ফ্রান্স রোম্যান্সের দেশ হলেও নারী ও শিশুদের ওপর যৌন নিগ্রহ বেড়েই চলেছে। অনেক সময় সেসব ঘটনা অপ্রকাশিতই থেকে যায়। কিন্তু ২০১৭ সালের ‘মি-টু’ আন্দোলন অনেক হিসেব বদলে দিয়েছে। ফ্রান্সেও তা ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

‘মি-টু’ আন্দোলন শুরু হওয়ার পর দেশটির অনেক তারকার ভাবমূর্তি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। ২০১৮ সালেই ফ্রান্স যৌনতা সংক্রান্ত অপরাধ আইন আরও কড়া করেছে। এবার দেশটি শিশুদের ওপর যৌন নিগ্রহ ঠেকাতে এই নতুন আইন করল।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

এএস/জেএস