আর মাত্র দুইদিন… এরপর পুরো বিশ্ব স্বাগত জানাবে নতুন বছর ২০২৪ সালকে। বিদায়ী বছর ২০২৩ সালে কী কী ঘটল এখন সেগুলোর স্মৃতি রোমন্থন করছেন বিশ্ববাসী। অনেকের মতে ২০২৩ সালটি ছিল একটি বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বছর। কারণ এ বছরেই বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ও ভয়াবহ ভূমিকম্পটি। যেটির আঘাতে তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া বন্যা-সাইক্লোন-আগ্নেয়গিরি-দাবানলসহ নানান প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিপর্যস্ত হয়েছে এই ধরনী। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো—

যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপের দাবানল: টানা কয়েক মাসের খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপে আগস্টে ভয়াবহ দাবানলের সূত্রপাত হয়। এতে কমপক্ষে ১০০ মানুষ প্রাণ হারান। দাবানলের আগুনে পুড়ে যায় কয়েক বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি।

রুয়ান্ডার বন্যা: অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পর মে মাসে আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় দেখা দেয় বন্যা। ওই বন্যায় ৫ হাজার ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর প্রাণ হারান ১২৯ জন।

সাইক্লোন মোখা: গত ১৪ মে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলে আঘাত হানে মহাশক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় সাইক্লোন মোখা। এই সাইক্লোনের আঘাতে বাংলাদেশে কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলেও; মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রায় ৪০০ মানুষ নিহত ও হাজার হাজার ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নেপালে ভূমিকম্প: গত ৩ নভেম্বর নেপালের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প। ওই ভূমিকম্পে ১৫৭ জন নিহত হন।

কঙ্গোর ভয়াবহ বন্যা: আফ্রিকার দেশ কঙ্গোতে মে মাসে মৌসুমী বৃষ্টির প্রভাবে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ বন্যা। এতে ৪৩৮ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান শত শত মানুষ।

আফগানিস্তানে ভূমিকম্প: গত ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানে আঘাত হানে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প। এতে কমপক্ষে ১ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়।

মরক্কোর ভূমিকম্প: গত ৮ সেপ্টেম্বর মরক্কোতে আঘাত হানে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প। ওই ভূমিকম্পের আঘাতে ২ হাজার ৯৪৬ জনের মৃত্যু হয়। মরক্কোর ভূপদার্থবিদ্যা ইনস্টিটিউটের এক কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী, এই ভূমিকম্পটি ওই অঞ্চলের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল।

বাধ ধসে লণ্ডভণ্ড হয় লিবিয়া: গত ১০ সেপ্টেম্বর লিবিয়ায় আঘাত হানে ড্যানিয়েল নামের একটি ঝড়। ওই ঝড়ের প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টির চাপে লিবিয়ার দারনা শহরের দুটি পাহাড়ি বাধ ভেঙে যায়। বাধ ভেঙে যাওয়ার পর সেগুলোর পানি দারনা শহরকে পুরো ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এতে কমপক্ষে ৪ হাজার ৩৫২ জন নিহত হন। ওই বাধ ধসের পর এখনো আট হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। ধারণা করা হয়, তারা বাধের পানির সঙ্গে সমুদ্রে ভেসে গেছেন।

তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্প: ২০২৩ সালকে যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় নাড়িয়ে দিয়েছিল, সেটি হলো তুরস্ক ও সিরিয়া সীমান্তে সংঘটিত হওয়া ৭ দশমিক ৮ ও দশমিক ৫ মাত্রার জোড়া ভূমিকম্প। এতে ৫৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের বেশিরভাগই তুরস্কের নাগরিক ছিলেন।

এমটিআই