প্রথমবারের মতো মঙ্গলগ্রহের ‘টাইমল্যাপ্স’ ধারণ করেছে গ্রহটিতে অবস্থান করা নাসার রোভার ‘কিউরিওসিটি’। মঙ্গলে দিনরাত্রি কেমন কাটে, সেই ছবি নিজের ক্যামেরায় ধরে রেখেছিল রোভার। এটি ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মঙ্গলপৃষ্ঠে নিজস্ব গতিবিধির ভিডিও ধারণ করেছে। আর এ কর্মযজ্ঞ চলেছে সোলার কনজাংকশন শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত।

কয়েক সপ্তাহ আগে মঙ্গলে অবস্থান করা বিভিন্ন রোবোটিক নভোযানের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় নাসার। সে সময় পৃথিবী ও মঙ্গল গ্রহ নিজ কক্ষপথের এমন জায়গায় পৌঁছেছিল, যেখানে তাদের মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান করেছে সূর্য। এমন ঘটনা ‘সোলার কনজাংকশন’ নামে পরিচিত।

সোলার কনজাংকশন এড়াতে ‘কিউরিওসিটি’ রোভারটির কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল— তবে রোভারের নিচের অংশে থাকা ‘হ্যাজার্ড-অ্যাভয়েডেন্স (হ্যাজক্যাম)’ ক্যামেরা সক্রিয় থাকায় প্রথমবারের নিজের স্থির অবস্থান থেকে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে মঙ্গল গ্রহের দিনের দৃশ্য রেকর্ড করেছে রোভারটি।

উল্লেখ্য, মঙ্গল গ্রহে থাকা রোভার যানটির সামনের ও পেছনের দৃশ্য রেকর্ড বা সম্ভাব্য বিপদ এড়ানোর উদ্দেশ্যে ‘হ্যাজক্যাম’ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

কিউরিওসিটির সামনে এবং পেছনে লাগানো রয়েছে কিছু সাদা-কালো ক্যামেরা। বিজ্ঞানীদের ভাষায়, হ্যাজক্যাম। এই ক্যামেরা দিয়েই মঙ্গলের একটি গোটা দিনের ছবি তুলেছে রোভার। কিন্তু কীভাবে তোলা হলো ছবি? ওই সময়টা জুড়ে মঙ্গলের মাটিতে পড়া নিজের ছায়ার ছবি তুলে গিয়েছে কিউরিওসিটি। 

আর ভোরবেলা ছায়া একরকম, বেলা যত গড়াচ্ছে, ছায়ার গতি-প্রকৃতি তত পাল্টে যাচ্ছে। কাকভোর থেকে গোধূলি পর্যন্ত, এই ভাবেই মঙ্গলের গোটা দিনের ছবি ক্যামেরাবন্দি করেছে রোভার। এজন্য অবশ্য, ‌‘ব্রেক’-এ যাওয়ার আগেই তাকে সবরকম নির্দেশ পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। তবে প্রতিদিন তার ওপর নজরদারিও চালিয়েছে। রোভারের স্বাস্থ্যের ওপর সবকিছুই নির্ভরশীল।

অবশেষে এসেছে সাফল্য। তবে যেভাবে ছবিগুলো কিউরিওসিটি পাঠিয়েছিল, হুবহু সেভাবেই সেগুলো প্রকাশ করা হয়নি। কিছু পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করা হয়েছে। তারপর এই ভিডিও। হ্যাজকামের ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্সে যা ধরা পড়েছিল, তা ঠিক করতে রি-প্রোজেকশনও করা হয়। এমন সময়ই এই ভিডিও প্রকাশ্যে এলো যখন মহাকাশ গবেষণার অন্য একটি দিকে রেকর্ড গড়ার প্রথম পদক্ষেপ করেছে ইসরো।

এমএ