গত ২ জানুয়ারি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে

ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার দেওয়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে রাশিয়া। এমন অভিযোগই সামনে এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি এটিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলেও অভিহিত করেছে।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার সরবরাহকৃত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং লঞ্চার ব্যবহার করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে। দেশটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি এটিকে রাশিয়ার প্রতি পিয়ংইয়ংয়ের সমর্থনের ‘গুরুত্বপূর্ণ এবং উদ্বেগজনক’ বৃদ্ধি বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করবে এবং অস্ত্র হস্তান্তরের পক্ষে যারা কাজ করছে তাদের ওপর অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। অবশ্য মস্কো এ ধরনের কোনও সহযোগিতা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে।

তবে গত বছরের সেপ্টেম্বরে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন সম্ভাব্য সামরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করতে রাশিয়া সফর করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য এর আগেও রাশিয়ায় অস্ত্র সরবরাহের জন্য পিয়ংইয়ংকে অভিযুক্ত করেছে। তবে এই প্রথম মার্কিন গোয়েন্দারা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তথা স্ব-নির্দেশিত রকেট সম্পর্কে বিশদ তথ্য প্রকাশ করেছে যা ৯০০ কিলোমিটার (৫০০ মাইল) দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তৃতাকালে জন কিরবি বলেন, উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে রাশিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সংগ্রহ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনেক প্রস্তাবের সরাসরি লঙ্ঘন।

তিনি বলেন, ‘আমরা রাশিয়াকে আবারও তার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহি করার দাবি করছি।’

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে, রাশিয়া ইরানের কাছ থেকে স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কেনার পরিকল্পনা করছে, কিন্তু এখনও তা করেনি।

যুক্তরাজ্য বলেছে, তারা ইউক্রেনে উত্তর কোরিয়া থেকে নেওয়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করায় রাশিয়ার ‘কঠোর নিন্দা’ করছে।

পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ এবং উন্নয়ন অফিসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘উত্তর কোরিয়া কঠোর নিষেধাজ্ঞার অধীনে আছে এবং আমরা ইউক্রেনে রাশিয়ার অবৈধ যুদ্ধকে সমর্থন করার জন্য উত্তর কোরিয়াকে চড়া মূল্য দেওয়া নিশ্চিত করতে আমাদের অংশীদারদের সাথে কাজ চালিয়ে যাব।’

এদিকে নিজের ব্রিফিংয়ে ইউক্রেনের জন্য ‘বিলম্ব না করে’ অতিরিক্ত মার্কিন তহবিল অনুমোদনের জন্য মার্কিন কংগ্রেসকেও আহ্বান জানান কিরবি। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের জনগণের বিরুদ্ধে রাশিয়ার ভয়াবহ সহিংসতার সবচেয়ে কার্যকর জবাব হলো ইউক্রেনকে গুরুত্বপূর্ণ আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা দেওয়া এবং অন্যান্য ধরনের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করা।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইরান এবং উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে। ইউক্রেনীয়দেরও এটা জানাতে হবে যে, আমেরিকান জনগণ এবং এই সরকার তাদের পাশে থাকবে।’

টিএম