সদ্যই বিদায় নেওয়া বছর ২০২৩ সাল আবহাওয়ার লিপিবদ্ধ ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর ছিল। জলবায়ু পরিবর্তন এবং আবহাওয়ার বিশেষ অবস্থা এল নিনোর কারণে তাপমাত্রায় এমন আধিক্য দেখা গেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু সেবা সংস্থা জানিয়েছে, মানুষ প্রচুর পরিমাণে জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানো শুরুর আগে যে তাপমাত্রা ছিল সেটি থেকে গত বছর বিশ্বের তাপমাত্রা ১ দশমিক ৪৮ সেলসিয়াস বেশি ছিল।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, তারা তাদের নিজস্ব বিশ্লেষণে দেখেছে গত বছরের জুলাই থেকে প্রতিদিন আবহাওয়ায় নতুন তাপমাত্রা দেখা গেছে। এছাড়া সমুদ্রের তাপমাত্রা আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।

বৈশ্বিক তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আন্তর্জাতিকভাবে যেসব লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল; আবহাওয়ার এমন অস্বাভাবিক আচরণের কারণে সেগুলো এখন ভাঙতে চলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের এঅ্যান্ডএম বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানের প্রফেসর এন্ড্রু ডেসলার বলেছেন, ‘যা আমাকে অবাক করেছে— শুধুমাত্র ২০২৩ সালের রেকর্ড ভঙ্গ নয়, কিন্তু যে পরিমাণে আগের রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে সেটিও অবাক করেছে। কিছু কিছু রেকর্ড সত্যিই অবাক হওয়ার মতো।’

গত ১০০ বছর আগে বিশ্বের তাপমাত্রা যেমন ছিল; এখন সেটি নেই। দিনে দিনে তাপমাত্রা পরিবর্তি হয়েছে। তবে এক বছর আগে— বিজ্ঞানীরা বলতে পারেননি— ২০২৩ সাল ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর হবে।

বছরের প্রথম ছয়মাস বেশ কয়েকটি পুরোনো রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। কিন্তু পরের ছয় মাস প্রায় সময়ই পুরোনো রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে।

এল নিনোর প্রভাব

আবহাওয়ার বিশেষ অবস্থা এল নিনোর প্রভাবে তাপমাত্রা এমন বেড়েছে। এল নিনো একটি প্রাকৃতিক বিষয়। এটি যখন প্রকৃতিতে হয় তখন পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের পানির তাপমাত্রা বেড়ে যায়।

গত বছর তাপমাত্রা বাড়ার বিষয়টি পুরো বিশ্বের ওপর প্রভাব ফেলেছে। এটির প্রভাবে কোথাও কোথাও দাবানল ও খরার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা গেছে।

বিজ্ঞানীরা হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সাল আরও উষ্ণ হতে পারে। অবশ্য এল নিনোর অনিশ্চিত আচরণের কারণে এটি নিশ্চিত করা বলা যাচ্ছে না আসলে কেমন হবে এ বছরের আবহাওয়া।

সূত্র: বিবিসি

এমটিআই