করোনা টিকার পর এবার ৮ শতাধিক রেমডেসিভির ইনজেকশন চুরি
ভারতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। মহামারির এই দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশটিতে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে মৃতের সংখ্যাও। আর তাই করোনার চিকিৎসায় জরুরি পরিস্থিতিতে রেমডেসিভির ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে মোদি সরকার।
ফলে করোনা টিকার মতো রেমডেসিভিরও সবার আগ্রহের কেন্দ্রে। এই পরিস্থিতিতেই ভারতের মধ্যপ্রদেশের এক সরকারি হাসপাতাল থেকে চুরি হয়ে গেছে এই ওষুধ। শনিবার (১৭ এপ্রিল) রাজ্যটির গান্ধী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে ৮৫০টি রেমডেসিভির ইনজেকশন চুরির ঘটনা ঘটেছে।
বিজ্ঞাপন
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, গত তিন সপ্তাহ ধরে মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের প্রধান শহর ভোপালে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় বেড ও অক্সিজেনের সংকটও রয়েছে শহরটিতে। তার ওপর রেমডেসিভির নিয়েও টানাটানি তো রয়েছেই। এর মধ্যেই চুরির এই ঘটনা ঘটল।
বিজ্ঞাপন
করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় রেমডেসিভির। করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশে এই অ্যান্টিভাইরাল ওষুধটি সরবরাহও করা হয়েছে। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে সংক্রমণ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ভারতে প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে এই ওষুধ।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, রেমডেসিভিরের বণ্টন বর্তমানে নিজের হাতে রেখেছে মোদি সরকার। প্রতিটি হাসপাতালে রোগী চিকিৎসার সক্ষমতা বা বেড সংখ্যা অনুযায়ী এই ওষুধ বণ্টন করা হচ্ছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনসুখ মানদাভিয়া জানিয়েছেন, সরকার রেমডেসিভিরের উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর চাহিদা বাড়ায় দাম কমানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। প্রতি মাসে ৮০ লাখ রেমডেসিভির প্রস্তুত করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই রেমডেসিভিরের দাম কমে যাবে।
মহারাষ্ট্র, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে রেমডেসিভিরের মজুত শেষের দিকে। মহামারি শুরুর পর ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় এই ওষুধের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু পরে পরিস্থিতি বিবেচনা করে এর ব্যবহারে ফের অনুমতি দেওয়া হয়।
করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যাদের জটিলতা বেশি তাদের ক্ষেত্রেই রেমডেসিভির ব্যবহার করা হচ্ছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের ডিজি বলছেন, রেমডেসিভির উৎপাদন কয়েকগুণ বাড়ানো হচ্ছে। ভারতের সাতটি সংস্থা ওষুধটি তৈরি করে। তাই চাহিদা থাকলেও সরবরাহে কোনো সমস্যা হবে না।
অবশ্য ভারতে ওষুধ চুরির ঘটনা এবারই প্রথম নয়। কিছুদিন আগে রাজস্থানে ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভিড-১৯ টিকা কোভ্যাক্সিনের ৩২০টি ডোজ চুরি হয়ে যায়। জয়পুরের শান্তিনগরে কানওয়াতি হাসপাতালের ভ্যাকসিন সেন্টার থেকে হিমাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল টিকাগুলো। মাঝপথে টিকার ৩২টি সিসি চুরি হয়ে যায়। প্রতিটি সিসিতে টিকার ১০টি ডোজ থাকে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে টিকার ৩২০টি ডোজ চুরি হয়।
উল্লেখ্য, হঠাৎ করে করোনা বৃদ্ধি পাওয়ায় কোভিডের ওষুধ নিয়েও দিশাহীন অবস্থায় রয়েছে বহু মানুষ। যার সুযোগ নিয়ে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে তিন-চার গুণ দামে রেমডেসিভির বিক্রি হচ্ছে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
টিএম