কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) দৌরাত্ম্যে অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের অন্তত ৪০ শতাংশ কর্মসংস্থান ধ্বংস হয়ে যাবে। ফলে বেকারত্বের উল্লম্ফন ঘটবে এবং এই বিপুল কর্মহীনতা সমাজের আর্থিক অসাম্য আর তীব্র করে তুলবে।

সোমবার বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ‍ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ সতর্কবার্তা দিয়েছেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার এবং নীতি নির্ধারকরা যদি এখন থেকে সচেতন না হন, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এআইয়ের কারণে ৪০ শতাংশ কর্মসংস্থান ধ্বংস হবে এবং তার ফলে বিশ্বজুড়ে বিদ্যমান আর্থিক অসাম্য আরও তীব্র হয়ে উঠবে।’

বিবৃতিতে আইএমএফ জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই ক্ষতিকর প্রভাবের শিকার হবে মূলত অগ্রসর অর্থনীতির দেশগুলো। উৎপাদন ব্যয় সংকোচনের জন্য উদ্যোক্তারা শ্রমিকের সংখ্যা কমাবেন এবং ব্যবহার বাড়াবেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার। উদ্যোক্তাদের এই প্রবণতাই এই ব্যাপক কর্মহীনতার দিকে সেসব অর্থনীতিকে নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে আইএমএফ।

কম অগ্রসর অর্থনীতিও যে একেবারে ঝুঁকিমুক্ত— এমন নয়। সেসব অর্থনীতেও সর্বোচ্চ ২৬ শতাংশ বেকারত্ব দেখা দিতে পারে বলে বার্তা দিয়েছে আইএমএফ।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাচেসের হিসেবে অনুযায়ী, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে বিশ্বে জুড়ে অন্তত ৩০ কোটি পূর্ণ কালীন (ফুল টাইম) কর্মসংস্থান পুরোপুরি হারিয়ে যাবে।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক অবশ্য বলেছেন, এআইয়ের আবির্ভাবের জেরে ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। কারণ সামনের দিনগুলোতে প্রয়োজনের তাগিদেই উন্নত দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশে শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা হবে। ফলে এআই আর হুমকি হয়ে উঠবে না।

তবে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ ইস্যুতে আরও সুনির্দিষ্ট অবস্থান নেওয়ার পক্ষপাতী। সোমবারের বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে দেশগুলোর প্রয়োজন কর্মীদের জন্য একটি সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং তাদেরকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া। যদি এ পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তাহলে বিপর্যয়ের মাত্রা অনেক কমে আসবে।’

বিবিসি

এসএমডব্লিউ