বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ

ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জায়গায় কদিন আগে উদ্বোধন হলো রামমন্দির। ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার বারাণসীতে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির সংলগ্ন জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে রীতিমতো চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।

মসজিদটি ১৬৬৯ সালে সম্রাট শাহজাহানের পুত্র ষষ্ঠ মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব নির্মাণ করলেও নির্মাণের সাড়ে ৩০০ বছর পর নতুন করে এর মালিকানা দাবি করেছেন হিন্দুরা। তাদের পক্ষে মামলা লড়তে চাওয়া এক আইনজীবীর মাধ্যমেই বিষয়টি সামনে এসেছে।

জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে পাঁচজন নারীর করা মামলায় আইনজীবী বিষ্ণু জৈন দাবি করেছেন, দেশটির পুরাতত্ত্ব বিভাগের রিপোর্ট তাকে দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, মসজিদের তলায় মন্দির আছে। এএসআই আদালতের নির্দেশে যে সমীক্ষার কাজ করেছিল, সেখানে তারা ৩৪টি লিপি পেয়েছে। দেবনাগরী ও অন্য ভাষায় লেখা এই লিপিতে জনার্দন, রুদ্র ও উমেশ্বর দেবতাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

আইনজীবীর দাবি, এএসআই রিপোর্টে বলা হয়েছে, মন্দিরে ওই লিপি সম্বলিত পাথর ছিল। পরে মন্দিরের পাথরগুলি মসজিদ তৈরির কাজে লাগানো হয়। মন্দিরের পিলার একটু অদলবদল করে মসজিদে ব্যবহার করা হয়েছে।

জানা যায়, বারাণসীর জেলা বিচারকের কাছে এই রিপোর্ট জমা দেয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ। কিন্তু তিনি এই রিপোর্ট প্রকাশ করেননি। তিনি জানিয়েছিলেন, রিপোর্ট খুবই সংবেদনশীল। তাই এই রিপোর্ট নিয়ে কোনো ভুল তথ্য প্রচারিত হোক, তা তিনি চান না।

কিন্তু মামলাকারীদের আইনজীবী বিষ্ণু জৈন দাবি করেছেন, তিনি এই রিপোর্ট হাতে পেয়েছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে রিপোর্টের কিছু অংশ তিনি পড়েও শুনিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলনে বিষ্ণু জৈন দাবি করেন, এএসআই তাদের রিপোর্টে বলেছে, তরা মন্দিরের কাঠামো ও একটি কুয়া পেয়েছে। প্রধান প্রবেশদ্বার ও সেন্ট্রাল চেম্বারে এই কাঠামো আছে বলে এএসআই রিপোর্টে উল্লেখ আছে। তারা সব থাম (পিলার) পরীক্ষা করেছে। সেগুলো মন্দিরের ছিল। আর যে সব লিপি উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে 'মহা মুক্তি মণ্ডপ' কথাটি আছে।

এ ব্যাপারে অযোধ্যায় রামমন্দির স্থাপনের মতোই বিজেপি বলছে, তারা আন্দোলন নয়, আইনের সাহায্যেই উদ্দেশ্য হাসিল করবে। এএসআইয়ের জরিপের দাবি প্রকাশ্যে আসায় সেই লক্ষ্য পূরণে বিজেপি অনেকটাই এগিয়ে গেছে বলে ধারণা করছেন দেশটির অনেকেই।

প্রসঙ্গত, ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ (এএসআই) গত ৪ আগস্ট থেকে বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষার কাজ করে আসছিল। ওজুখানা বাদে সব জায়গায় তারা সমীক্ষার কাজ শেষ করেছে। তবে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের ফলে তারা ওজুখানার সমীক্ষা করতে পারেনি।

পিএইচ